বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ওসমানীনগরে বন্ধ হয়নি কোচিং সেন্টার !

17

শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সারা দেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখতে করোনা শুরুর পর থেকেই দফায় দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই ওসমানীনগরে শিক্ষকরা দেদারসে চলাচ্ছেন কোচিং সেন্টার। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের সাথে জড়িত কয়েকজন শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে কোচিং বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। তাই শিক্ষার্থীরাও করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সচেতন মহল দাবি করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শুরু করেছেন কোচিং বাণিজ্য। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা তাদের বাসা বাড়িতে গড়ে তুলেছেন কোচিং সেন্টার। এদিকে, করোনার কারণে দীর্ঘ ৫ মাস থেকে বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার বন্ধ। কোচিং সেন্টারের মালিকদের মাসের পর মাস গুণতে হচ্ছে লোকশান। কিন্তু কিছু শিক্ষক করোনার কারণে বিদ্যালয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোচিং সেন্টার বন্ধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের বাসায় গড়ে তুলেছেন কোচিং সেন্টার। উপজেলার গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুর রহমান গোয়ালাবাজারের করনসী রোডস্থ বাসায় গড়ে তুলেছেন তার কোচিং সেন্টার। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নিজের বাসায় ছাত্র ছাত্রী মিলিত করে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য। উপজেলার তাজপুর নূর মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান চৌধুরী। তিনি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকে কোন সময়ও বন্ধ রাখেননি তার বাসায় কোচিং। দয়ামীর সদরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজিজুল হক দয়ামীর বাজারে ভাড়া বাসা নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য। এ রকম আরো একাধিক শিক্ষকরা ছাত্র ছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করতে তারা নিচ্ছেন নানা কৌশল। এসব কোচিং সেন্টারে পড়ে লেখা করা এমন ছাত্র ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একই ব্রেঞ্চে ৫-৬ জনকে বসিয়ে পড়ানো হয়। সেখানে নেই কোন করোনা প্রতিরোধক সুরক্ষা সামগ্রী। তাই তারাও আতংকে রয়েছে। এদিকে, বাণিজ্যিক ভাবে কোচিং সেন্টার গুলো করোনার কারণে মুখ থুবরে পরেছে। ৫ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান গুলো লোকসান গুণলেও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এখনো কোন প্রতিষ্ঠান খুলা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষক ৫ মাস থেকে বেকার। বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার সাকসেস পয়েন্টের পরিচালক পলাশ জানান, পাবলিক পরীক্ষার কারণে বছরে ৪ মাস বন্ধ থাকে কোচিং সেন্টার। বর্তমান মহামরি করোনার কারণে ৫ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানটি।
অনুশীলন কোচিং সেন্টারের পরিচালক এম এ তাহের বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আগেই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবেছেন। তাই আমরাও আমাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ রেখেছি। কিন্তু যারা মিনি কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্র ছাত্রীদের বিপদের দিকে ফেলছে তারা তা ঠিক করছেন না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমানীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার বলেন, এই বিষয় গুলো আমাকে কেই জানায়নি। আমরা তো আর বাসায় বাসায় গিয়ে চেক করতে পারবো না। তার পরও এই বিষয়য়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো।