আজহারের স্ত্রীকে গালমন্দ, দর্শক পেটাতে গিয়েছিলেন ইনজামাম

11

স্পোর্টস ডেস্ক :
আজ থেকে প্রায় ২৩ বছর আগের কথা। টরেন্টোয় ভারতের বিপক্ষে সাহারা কাপের ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে পাকিস্তান দল। ইনিংসের ১৬তম ওভারে বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিং করা অবস্থায় হঠাৎ এক ভারতীয় দর্শককে মারতে গ্যালারির দিকে ছুটে যান পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ইনজামাম উল হক। তাকে টেনে মাঠে ফিরিয়ে আনার পর ফের একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ওই দর্শককে মারতে ছুটে যান তিনি।
সেই সময় শোনা গিয়েছিল, তাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করায় ক্ষুব্ধ ইনজি ওই দর্শককে মারতে গিয়েছিলেন। তাকে গ্যালারি থেকে এক দর্শক ‘মোটা আলু’ বলে খেপাচ্ছিল। কিন্তু এতদিনে বিষয়টা খোলাসা করলেন তার সে সময়ের সতীর্থ ও সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াকার ইউনুস। তিনি জানালেন, আসলে তাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ নয়, বরং সেসময়ের ভারতীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের স্ত্রীকে নিয়ে গালমন্দ করায় ক্ষেপে গিয়েছিলেন ইনজামাম।
সাহারা কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ১১৬ রান তাড়া করছিল ভারত। ওই ম্যাচেরই এক মুহূর্তে এক দর্শককে ব্যাট দিয়ে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন ইনজামাম। ঘটনাটির স্মৃতিচারণ করে ওয়াকার বলেন, ‘কেউ একজন ওকে (ইনজামামকে) “আলু” বলে খেপাচ্ছিল। কিন্তু ঘটনা আরও আছে। দর্শকদেরই একজন আজহারউদ্দিনের স্ত্রীকে নিয়ে গালমন্দ করছিল। কিন্তু ইনজির এটা মোটেও পছন্দ হয়নি।’
ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মধ্যে সেসময় খুব আন্তরিক সম্পর্ক ছিল, মাঠের লড়াই মাঠেই সীমাবদ্ধ থাকত বলে জানালেন কিংবদন্তি পেসার, ‘সেসময় আসলে মাঠের খেলার বাইরে দুই দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। মাঠে আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ ছিলাম ঠিকই, কিন্তু মাঠের বাইরে আমাদের মধ্যে খুবই ভালো বন্ধুত্ব ছিল। গ্যালারি থেকে কেউ আজহারউদ্দিনের স্ত্রীকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিল। সেই সময় সেলিম মালিক অধিনায়ক ছিল সম্ভবত। তাকে বলে ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে গিয়েছিল ইনজামাম। এরপর টুয়েলভথ ম্যানকে ডেকে একটা ব্যাট নিয়ে ওই দর্শকের দিকে তেড়ে গিয়েছিল ইনজি।’
ওই ঘটনার কারণে পরে শাস্তি পেতে হয়েছিল ইনজামামকে। বিষয়টা সেখানেই মিটমাট করার চেষ্টা হলেও শেষ পর্যন্ত দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়ে তাকে। এ নিয়ে ওয়াকার বলেন, ‘ওই ঘটনায় মূল্য চোকাতে হয়েছিল। ইনজিকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে এবং এই ঘটনার জন্য এমনকি ওরা আদালতেও গিয়েছিল। আজহার অবশ্য ওই ভারতীয় দর্শকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা আদালতের বাইরেই মিটমাট করে নিয়েছিল।’
‘এটা অনেক দুঃখজনক এবং বাজে একটা ঘটনা ছিল। কিন্তু আমি বলতে চাইছি, যখন একজন আরেকজনের দেখভালের ব্যাপার আসে, দুই দলেই এমন কয়েকজন খেলোয়াড় আছে যারা একে অন্যের সঙ্গ বেশ পছন্দ করে,’ এই বলে শেষ করেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বর্তমান বোলিং কোচ।