সিলেটের শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মেলা বন্ধে বাণিজ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন সৈয়দ ইয়ারব আলী বাপ্পী। বৃহস্পতিবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দপ্তরে গিয়ে তিনি এই আবেদন করেন। পাশাপাশি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আবেদন সূত্রে জানা যায়- সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামেই শুধু খেলার মাঠ। কিন্তু এই স্টেডিয়ামে কোনো খেলার আয়োজন করা হয়না। মেলার জন্য এই স্টেডিয়ামে সবসময়ই চলে খুঁড়াখুঁড়ি আর ইট বিছানোর কাজ। বাদ যায় না গরুর হাটও। এ বছর ছাড়িয়ে গেছে অতিতের রেকর্ডও। এবার মাস পেরোতে না পেরোতেই আবারো বাণিজ্য মেলার আয়োজন চলছে এই স্টেডিয়ামে। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের মাঠের ¬খোলা জায়গায় বিভিন্ন এলাকার এবং স্থানীয় শিশু-কিশোর খেলাধূলা করতো। স্থানীয় এলাকার অনেক ডায়বেটিক রোগীরা ভোরে ও বিকেলে হাঁটাহাঁটি করতেন। এখন আর তা করতে পারছেন না। কারণ তারা এখানে এসে আগের পরিবেশ পাচ্ছে না। এই মাঠের পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতার রয়েছে। ক‘দিন পর পর এই জায়গায় মেলার আয়োজন, কখনোবা পশুর হাটের আয়োজন করা হয়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ রাসেলের নামে আজ পর্যন্ত কোনো খেলার আয়োজন করা হয়নি।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এ মাঠে শেষ হয়েছে সিলেট চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়। কিন্তু এ বাণিজ্যমেলা শেষ হতে না হতেই আরেকটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। এদিকে সিলেটে ঘনঘন মেলার কারণে বিপাকে পরছেন ব্যবসায়ীরা। তারা মেলা বন্ধের দাবিতে নগরীতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
বিগত ৫ বছর থেকে তথাকথিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এবং পশুর হাট হিসেবে ভাড়া দিয়ে আসছেন। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মেলা বন্ধের জন্য জনস্বার্থে সিনিয়র সহকারী জজ সদর আদালত, সিলেট-এ মামলাও হয়েছে। স্বত্ব মামলা নম্বর-১৯/২০১৯। খেলার মাঠে খেলা হবে, কোনো ধরণের মেলা বা পশুর হাটসহ কোনো ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম যেনো না করা হয়।
এনিয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মেলা বন্ধের নিষেধাজ্ঞারও আবেদন করা হয়েছে। আদালত বিবাদী পক্ষকে শোকজ করেছেন যে, ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে জবাব দেবার জন্য। কিন্তু শোকজ জারীর করার পরও আদালতে কোনো জবাব না দিয়ে তারা আদালতকে অবমাননা করে তড়িঘরি করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দ ইয়ারব আলী বাপ্পী বলেন, সিলেটে একের পর এক বাণিজ্যমেলার কারণে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিগত ৫ বছর থেকে তথাকথিত বাণিজ্যমেলা এবং পশুর হাটের জন্য নগর সংলগ্ন শাহী ঈদগাহ খেলার মাঠ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম ভাড়া দিয়ে আসছে উপজেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনও বেআইনী এই কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছে। তাছাড়া এই মাঠ ঘেঁষা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। মেলার আয়োজন করায় উচ্চ স্বরে গান বাজনা করাতে রোগীদের হৃদরোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ রাসেলের নামে আজ পর্যন্ত কোনো খেলার আয়োজন করা হয়নি। আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দপ্তরে গিয়ে এই মেলা বন্ধে তাদের কাছে আবেদন করি। আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রসংগত, ৬ ফেব্র“য়ারী সিলেটের খাসদবীর এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ ইয়ারব আলী বাপ্পী জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় মূল বিবাদীরা হলেন-সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হাসিন আহমদ, মেলার সমন্বয়কারী ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য এম এ মঈন খান বাবলু।
এই মামলায় সিলেটের জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি