কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারের উন্নয়নের কারণেই খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই ভোটটা এসেছে মূলত আমরা যে উন্নয়নের কাজটা করেছি, ব্যাপকভাবে উন্নয়ন। এটা অন্তত খুলনাবাসী উপলব্ধি করতে পেরেছে যে আওয়ামী লীগ আসলে উন্নতি হয়।
রবিবার সন্ধ্যায় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র ও কাউন্সিলররা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ১৫ মে’র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে প্রায় ৬৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন তালুকদার আবদুল খালেক। এবারই প্রথমবারের মতো খুলনায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়েছে।
খুলনার মানুষ এক সময় নৌকায় ভোট দিতোই না-এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী কারণে আমরা বুঝতে পারতাম না। গত নির্বাচনে আমরা জয় লাভ করেছি। মেয়র নির্বাচনে আমাদের আব্দুল খালেক যখন দাঁড়াল তখন এক লাখ ৫৮ হাজার ভোট পেয়ে সে জিতে। কিন্তু পরের নির্বাচনে ৬০ হাজার ভোটে পরাজিত হলো। এবারে যখন নির্বাচন আসলো তখন আপনাদের সাথে বসলাম, আপনারা বললেন আমরা জিতব। ঠিকই আমরা দেখলাম এবার ৬০ হাজার ভোট কাভার করে এর চেয়ে বেশি ভোটে আমরা জিতেছি।
কাজ করে না বিএনপি : গত পাঁচ বছর খুলনায় বিএনপি মেয়র মনিরুজ্জামান মনির প্রসঙ্গও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা এতগুলি প্রজেক্ট দিলাম, একটা প্রজেক্টের কাজও তারা শেষ করতে পারে নাই। প্রতি বাজেটে আমরা টাকা দিয়েছি। কী করেছে টাকা-পয়সা তা জানি না। কিন্তু সেই উন্নয়নটা যেটা আমাদের খালেক সাহেব থাকতে ছিল, সেটা হয়নি। উল্টো টাকা খেয়ে চলে গেছে। লুটপাটটা তারা ভালো জানে।
যখন বিএনপির মেয়র ছিল তখনও কিন্তু প্রত্যেকটা সিটি করপোরেশনে আমরা যেভাবে উন্নয়নের জন্য প্রকল্প দিয়েছি, রাজশাহী হোক, খুলনা হোক বা বরিশাল হোক, সব জায়গায় আমরা কিন্তু উন্নয়নের প্রকল্প কখনো বন্ধ করি নাই। কে মেয়র আছে, কে নেই আমরা কিন্তু সেটা দেখি নাই। আমরা কিন্তু সব জায়গায় দিয়েছি।
তারা কিন্তু কোনো উন্নয়ন করেনি। টাকা-পয়সা কী করেছে আমি বলতে পারব না। তবে কাজ তারা করে নাই-এটা হলো বাস্তবতা। তাদের কাজের দিকে মনই ছিল না। কাজ করে তারা অভ্যস্ত না।
এত সুষ্ঠু নির্বাচন কবে হয়েছে?
খুলনায় বিএনপিকে ভোট ডাকাতি করে হারানো হয়েছে বলে দলের নেতাদের অভিযোগেরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন তোলেন এর চেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন বিএনপি আমলে কবে হয়েছিল।
এটা নিয়ে অনেকেই চুলচেরা বিশ্লেষণ, অনেকেই অনেক কথা বলে। যারা এই নির্বাচন নিয়ে কথা বলে তাদের জন্য আমি এই জবাবটা দিতে চাই। বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যে খেলা, ভোট চুরি করা, সিল মারা, বাক্স ভরা থেকে শুরু করে যত রকমের অপকর্ম এটা তো শুরু করে দিয়েছে জিয়াউর রহমান।
প্রথমে সে (জিয়াউর রহমান) নিজে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে অস্ত্রের মাধ্যমে। সায়েমকে বঙ্গভবন থেকে উঠিয়ে দিয়ে নিজেই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করল।
একদিকে সেনাবাহিনী প্রধান আরেকদিকে রাষ্ট্রপতি। আইন ভঙ্গ করেছে। হাজার হাজার সেনাবাহিনীর সদস্য হত্যা করেছে। সেনাবাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছে।
এমনকি যখন জিয়া মারা গেলো, মারা যাওয়ার পর কোনো বিচার হলো না। বিচার ছাড়াই ১২ জন সেনা অফিসারকে একেবারে ক্যামেরা ট্রায়েল করে তাদেরকে ফাঁসি দিয়ে দিল।
ক্ষমতায় থাকার জন্য (জিয়া) হ্যাঁ/না ভোট দিয়ে ভোট চুরির মহড়া, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন তারপর ৭৯ সালের নির্বাচনে ভোট চুরি। ভোট চুরি করাটাই তাদের একটা চরিত্র।
খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সালে ভোট চুরি করে ঘোষণা দিল যে, একেবারে জনগণ না কি তাকে ঠেলে ভোট দিয়েছে। কিন্তু কেউ ভোট দেয়নি।
৫ পার্সেন্ট ভোটও পড়ে নাই। অধিকাংশ হয়ে গেলো আনকনটেস্টে। জনগণ মানে নাই সেই নির্বাচন। আন্দোলন হলো, খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হলো।
ওরা ক্ষমতায় থাকা মানে একটা না একটা অঘটন বাংলাদেশে ঘটবে। জিয়ার আমলে যেমন ১৯ টা ক্যু, খালেদা জিয়ার ভোট চুরি আবার ক্ষমতায় আস। একদিকে মানুষের অত্যাচার, আবার মানুষের সম্পদ লুটপাট করা।