আবাসন খাত রক্ষায় পদক্ষেপ নিন

11

রাজধানীর ওপর দেশের মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ঢাকামুখো মানুষের স্রোত। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারও এখন ঢাকায় নিজেদের একটি আবাসের স্বপ্ন দেখে। আর মানুষের এই মৌলিক চাহিদা পূরণ তথা স্বপ্নপূরণে সহায়তা করে যাচ্ছে দেশের আবাসন খাত। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় দেশের আবাসন খাত বিকশিত হতে পারেনি। আর এখন এই করোনাকালে মহাসংকটে পড়ে ধুঁকছে ২৫ হাজার কোটি টাকা বার্ষিক আয়ের এই খাত। বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তায় উদ্যোক্তারা। আর আবাসনের ৪৫৬টি উপখাতের ৩৫ লাখ শ্রমিক বর্তমানে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। দেশের আবাসন খাত ঘিরে গড়ে উঠেছে রি-রোলিং মিল, সিমেন্ট, স্টিল মিল থেকে শুরু করে বেসরকারি খাতের অনেক শিল্প। এসব খাতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু আবাসন খাত মুখ থুবড়ে পড়ায় এসব খাতেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, করোনাকালে অর্থনৈতিক সংকটে কালো টাকা সরকারের রাজস্বের একটি বড় উৎস হতে পারে। কর না দিয়ে ঘরে লুকিয়ে রাখা টাকা সরকার অনুমোদিত জমি ও ফ্ল্যাট প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, করোনাকালের এই অর্থনৈতিক সংকটে কালো টাকা ঘরে লুকিয়ে না রেখে সরকার অনুমোদিত জমি ও ফ্ল্যাট প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলে বাঁচবে অর্থনীতি। কেমন করে তা সম্ভব, সে পথও বলে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সরকারি কোষাগারে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে কালো টাকায় নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্রশ্নহীন বিনিয়োগের সুযোগ থাকলে আবাসনের প্লট ও ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ বাড়বে। আর সংকটকালীন সরকার রাজস্ব পেয়ে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার এই সংকটে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে মানুষের মৌলিক চাহিদা বাসস্থান নিশ্চিতে সহায়ক আবাসন খাতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলে দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আবাসন খাতের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে হলে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি পূরণ করতে যে খাতটি এগিয়ে এসেছে, সেই খাতের বিকাশের পথ থেকে সব বাধা সরিয়ে নিতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখেই আবাসন খাতকে সচল রাখতে হবে। আমরা আশা করব, আবাসন খাতের বাধা দূর করতে সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।