সবাই ফেল ১০৪টি প্রতিষ্ঠানে, সবাই পাস ৩ হাজার ২৩টিতে

30

কাজিরবাজার ডেস্ক :
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছে ৩ হাজার ২৩ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানের কেউ ফেল করেনি। আবার শতভাগ ফেল করেছে ১০৪ প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ ১০৪ প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমেছে।
রবিবার ফল ঘোষণার পর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রবিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমানে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ফেসবুক লাইভে এসে ফলের বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।
ফল বিশ্লেষণে দেখা যায় এবছর ৩ হাজার ২৩ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। ওসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদ্রাসা রয়েছে ১ হাজার ৭৫৬টি। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি শতভাগ পাস করা এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। গত বছর শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৮৩টি। সে হিসেবে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৪৪০টি। এরও আগে ২০১৮ সালে শতভাগ পাসের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল এক হাজার ৫৭৪টি। ২০১৭ সালে ২ হাজার ২৬৬টি এবং ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৭৩৪টি, ২০১৫ সালে ৫ হাজার ৯৫টি এবং ২০১৪ সালে ৬ হাজার ২১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছিল। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার সার্বিকভাবেই ফল ভাল হয়েছে। বিশেষ করে কমেছে শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, অন্যদিকে বেড়েছে শতভাগ কৃতকার্য হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। তাই এবারের ফল নিয়ে আমরা খুশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ফল দেখে ভীষণ খুশি হয়েছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদ্রাসা বোর্ডে রয়েছে ১৭৫৬টি, কারিগরি বোর্ডের ১০০টি। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতভাগ পাস করেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ৩০৮টি। এরপরে যশোর বোর্ডে ২৫০টি, কুমিল্লা বোর্ডে ১৬২টি, ঢাকা ১৫৭টি, দিনাজপুর ১২২টি, বরিশাল ৫৪টি, সিলেট ৪৩টি এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ২১ প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থীরা পাস করেছে।
এদিকে, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০৪ প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। ওসব প্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল করেছে। তবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে কমেছে। গতবছর শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১০৭টি। সে হিসেবে শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠান কমেছে ৩টি। ২০১৮ সালে শূন্য পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১০৯টি। ২০১৭ সালে ৯৩টি এবং ২০১৬ সালের ৫৩টি, ২০১৫ সালে ৪৭টি এবং ২০১৪ সালে ২৪টি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী ফেল করেছিল। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, কেন প্রতিষ্ঠানগুলো এতটা খারাপ করল, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। একজন শিক্ষার্থীও পাস করবে না, এমন করুণ অবস্থাতো হওয়ার কথা নয়। কেউ পাস করেনি, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গত বছর চেয়ে কমলেও শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ব্যর্থতার বিষয়কে এভাবে তুলনা করতে চাই না আমরা। শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ বেড়েছে, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে, অনেকক্ষেত্রে শিক্ষার ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। এতকিছুর পরও এমন ফল কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৫০টি প্রতিষ্ঠান। এরপরেই রয়েছে মাদ্রাসা বোর্ডে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও যশোর ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ২টি করে প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি। একইসঙ্গে ঢাকা এবং দিনাজপুর বোর্ডের একটি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি।
নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে গড়ে ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সবগুলো বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোট ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী পাস করেছে।