কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে দেশে নতুন করে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ গরিব হয়েছে। তারা করোনার আগে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা উপর থেকে ঝুঁকিতে ছিল।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক গবেষণায় এ ফলাফল উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়, গ্রামের চেয়ে শহরে নতুন করে গরিব হওয়ার প্রবণতা বেশি। শহরের ২৫ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী গরিব হয়েছে। গ্রামে এই হার ২১ দশমিক ৬ শতাংশ।
দেশে গত ৪ থেকে ১২ এপ্রিল ১২ হাজার পরিবারের ওপর গবেষণাটি করা হয়। এরমধ্যে গবেষণা প্রশ্নের উত্তর দেন ৫ হাজার ৪৭১ জন।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের জবাবে আয় কমে যাওয়া, খাদ্যগ্রহণের সীমাবদ্ধতা, কি ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, এসব চিত্র উঠে আসে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা, হয় গরিব মানুষকে সরকারের নগদ অর্থ সহায়তা করা উচিত। আর পুরনো ও নতুন গরিব মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দিতে প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা খরচ হবে।
গবেষণায় একটি হিসাব দেখিয়ে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে দেশে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে এখন মোট জনগোষ্ঠীর ৪৩ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এরমধ্যে গ্রামে চার কোটি ২৯ লাখ ৯৪ হাজার ১২৭ জন। আর শহরে ২ কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার ৭১৯ জন বাস করে। গ্রামের গরিব মানুষকে প্রতিমাসে এক হাজার ৪৫০ টাকা করে নগদ সহায়তা দিলে লাগবে ৬ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। আর শহরের মানুষকে মাসে এক হাজার ৭৪৫ টাকা করে দিলে লাগবে ৪ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় এপ্রিলে দেশে গরীব মানুষের আয়ের ৭৫ শতাংশ, অতি গরিবের আয় ৭৩ শতাংশ, গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের আয় ৬৭ শতাংশ এবং গরীব নয় এমন মানুষের আয় ৬৫ শতাংশ কমে গেছে।
গবেষণা সম্পর্কে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দারিদ্র্য বেড়েছে। মানুষ নতুন করে গরীব হচ্ছে। এটা বেশ উদ্বেগজনক। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আমাদের টেকসই জীবন যাপনের উপর প্রভাব ফেলেছে।