কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবশেষে দেশে ফিরে এসেছেন যুক্তরাজ্যে আটকাপড়া একদল বাংলাদেশী। সোমবার ভাড়া করা বিমানের একটি ফ্লাইটে তারা দেশে ফিরেন। এদিন অন্তত আরও ৫ ফ্লাইট ওঠানামা করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ঈদের আগে এ ব্যস্ততা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এ্যাভসেক পরিচালক উইং কমান্ডার ওবায়দুর রহমান। যুক্তরাজ্য ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরেছেন ১৫১ জন বাংলাদেশী। এ ছাড়াও ঢাকায় বসবাসরত ইন্দোনেশিয়া, দ. কোরিয়া ও ভারতের নাগরিকরা পৃথক পৃথক স্পেশাল ফ্লাইটে দেশে ফিরে গেছেন। এদিন প্রায় ৮ শ’ যাত্রী আসা যাওয়া করেন।
বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ বা পড়ালেখার জন্য গিয়ে সেখানে লকডাউনে আটকাপড়া ১১৪ জন বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। তাদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সোমবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে বাংলাদেশে এসে আটকাপড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের দেশে ফেরাতে রবিবার দুপর ১২টা ৯ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২৭১ আসনের বোয়িং ৭৮৭-৮ উড়োজাহাজটি ১৫৪ জনকে লন্ডনের হিথ্রোতে নিয়ে যায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ব্র্রিটিশ ও বাংলাদেশী নাগরিকদের আনা- নেয়ার জন্য বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা দ্বিতীয় সি-১৩০জে বিমান আনতে এই চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন বিমানবাহিনীর ১৫ জন এয়ার ক্রু। এ মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শান্তানু চৌধুরী, জিডি (পি)। এদিকে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, লন্ডন থেকে ফেরা যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রী। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদ মুনা তাসনীম হিথ্রো এয়ারপোর্টে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনকারী যাত্রীদের বিদায় জানান।‘বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন কোভিড-১৯ জরুরী প্রত্যাবাসন কমিটির’ মাধ্যমে এই আটকাপড়া বাংলাদেশীদের প্রত্যাবসন কাজ সম্পন্ন করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ ২০০ শতাধিক বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনেকে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করে এবং দেশে ফিরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার আশঙ্কায় তাদের বুকিং বাতিল করেন। ঢাকায় রওনা হবার আগে লন্ডন হাই কমিশন দেশে প্রত্যাবর্তনকারী ছাত্র-ছাত্রীসহ সব যাত্রীর জন্য তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা পর্যালোচনা করে কোভিট-১৯-এর উপসর্গমুক্ত সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে। এতে ঢাকা ফেরার পর তাদের কেবল হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
এ সম্পর্কে সাইদ মুনা তাসনীম বলেন- বাংলাদেশ হাই কমিশনে আমরা সবাই অত্যন্ত আনন্দিত যে এই বিশেষ বিমানে অনেক আটকাপড়া বাংলাদেশী বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের কাছে ঈদ-উল-ফিতরের উৎসবের আগেই ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। ইউকে ফরেন ও কমনওয়েলথ অফিস, ইউকে হোম অফিস, ইউকে বর্ডার এজেন্সি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং হিথ্রো এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে আটকাপড়া বাংলাদেশীদের নিরাপদে দেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করায় বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।
এদিকে বেলা সাড়ে এগারোটায় লায়ন এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে ১৫১ জন বাংলাদেশী নাগরিক ঢাকায় ফেরেন। তারা ব্যবসায়িক ও পর্যটক হিসেবে ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে আটকা পড়েন। লায়ন এয়ারের ওই ফ্লাইটেই ফিরে গেছেন ঢাকায় বসবাসরত ইন্দোনেশিয়ার ১৯৬ জন নাগরিক। দুপুর একটায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি স্পেশাল ফ্লাইটে মুম্বাই ফিরে গেছেন ঢাকায় বসবাসরত ১০৭ জন ভারতীয় নাগরিক। তারা মোদি সরকারের ঘরে ফেরা বন্দে মাতরম কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ফিরে গেছেন। এর আগে কোরিয়ান এয়ারের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরে গেছেন ঢাকায় বসবাসরত ২৬২ জন নাগরিক।