শ্রমিকদের মজুরি-স্বাস্থ্য-খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান, সবেতন চা বাগান বন্ধ, পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিতসহ নানা দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, মালনীছড়া শাখার উদ্যোগে ৫ মে (মঙ্গলবার) বিকাল ৪টায় মালনীছড়া চা বাগানে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সদস্য ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন এর সংগঠক অজিত রায় এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সালটি বাড়াইক, সপ্তমী কালোয়ার, মাধবী বাউরী,করুনা রায়, চম্পক বাউরী প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও এখন করোনা মহামারীতে মানুষের মৃত্যু বেড়ে চলেছে। সিলেটেও সেই আক্রমণের বাইরে নয়। করোনা পরিস্থিতিতে মালনীছড়াসহ অন্যান্য চা বাগানের শ্রমজীবী-নি¤œ আয়ের মানুষ আছেন চূড়ান্ত খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংকটে। বর্তমানে সারাদেশ লক ডাউন এ থাকলেও চালু আছে চা বাগান। করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনা নেই এই অজুহাতে বাগান চালু হলেও প্রচন্ড ঝুঁকির মাঝে চা শ্রমিকরা কাজ করছে। নিয়মানুসারে তাদের ঝুঁকি ভাতা দেয়ারও কোনো পরিকল্পনা ও ইচ্ছা মালিকের নেই। শ্রমিকরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহযোগিতা। আবার সরকার ও জনপ্রতিনিধিরা ‘বাগান খোলা রাখার ‘ যুক্তিকে সামনে নিয়ে এসে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার ও আড়াল করছে। বাস্তবে চা শ্রমিকের দৈনিক ১০২ টাকা যে মজুরি মালিকপক্ষ হতে পায় তা পরিবারের ভরনপোষণ এর জন্য খুবই অপ্রতুল। ফলে স্বাভাবিক সময়ে বাগানের বাহিরে বিকল্প কাজের যে সুযোগ ছিল লক ডাউন অবস্থায় তাও নেই। ফলে প্রতিটি শ্রমিকের রাষ্ট্রীয় ত্রাণ সহযোগিতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। আবার কিছু ত্রাণ বরাদ্দ হলেও মালনীছড়া বাগানের প্রায় ৫০০ পরিবারের মধ্যে কিছু সংখ্যক পরিবার ত্রাণ পেয়েছে যা খুবই সামান্য। তাছাড়া তা বিতরণের ব্যাপারে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। সারা দেশের মত সিলেটের চা বাগানেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই চা শ্রমিকদের সবেতন ছুটি দেয়া এখন সময়ের দাবি এবং আমরা সেই দাবি করছি। করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে চলছে সরকার ও মালিকপক্ষের নানা চক্রান্ত।শ্রমিক সমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না। চা শ্রমিক সহ সারাদেশের সচেতন মহল ও মেহনতী শ্রমিক সমাজকে লড়াইয়ে এগিয়ে আসার আহŸান জানাই।”
কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ নিম্নোক্ত দাবি জানান: সবেতন চা বাগান ছুটি ঘোষণা কর, চা শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে, চা বাগানের শ্রমিকদের ঝুঁকি ভাতা দাও, চা বাগানের দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা নির্ধারণ কর। বিজ্ঞপ্তি