কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর সারি। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে। সর্বশেষ ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ৩ হাজার ৩৩২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৯১ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬ লাখ ৫৯ হাজার তিনশ’ জন। এদিকে ভাইরাসের কারণে নাগরিকদের চাকরির সুরক্ষায় অভিবাসন স্থগিত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প আর লকডাউন শিখিলের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে ইতালি। তবে স্বস্তির খবর দিয়েছে ইরান, দেশটির আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৯২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৪৩৩ জনের মৃত্যু॥ যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনাভাইরাসে নতুন করে আরও ১ হাজার ৪৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারী হিসেবে দেশটিতে এ ভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২ হাজার ৯৪ জনে। মঙ্গলবার মার্কিন গবেষণা সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্স এ তথ্য জানায়। দেশটিতে ৭ লাখ ৮৪ হাজারেরও বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। যদিও সেখানে ধীরে ধীরে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার কমে আসছে। ফলে এ অঙ্গরাজ্যে করোনা স্তিমিত হয়ে আসছে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফ্রান্সে মৃত্যু ছাড়াল ২০ হাজার ॥ এবার ফ্রান্সেও মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াল। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে আরও ৫৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেখানে সরকারী হিসেবে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২০ হাজার ২৬৫ জনে। মঙ্গলবার ফ্রান্সের পাবলিক হেলথ চিফ জেরোমে সালোমন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সোমবার দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২ শতাংশ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৮ হাজার সেরে উঠেছেন।
বেলজিয়ামে ৫৬৮৩ জনের মৃত্যু ॥ বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ হাজার ৬৮৩ জন। সঙ্গে বাড়ছে নতুন শনাক্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ হাজার ৬৮৩ জন। মৃতদের অর্ধেকই রিটায়ারমেন্ট হোমে বাস করতেন। তাদের চার শতাংশ শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগী এবং ৯৬ শতাংশ সন্দেহভাজন রোগী। ইউরোপের এ দেশটিতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা মোট ৩৮ হাজার ৪৯৬।
তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ২৬ কোটি মানুষ ॥ চলতি বছর বিশ্বে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হবে ২৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণ। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা।
ইরানে আক্রান্তদের ৯২ শতাংশ সুস্থ ॥ ইরানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৬১ হাজার রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। দেশটিতে পর্যন্ত মোট ৮৪ হাজার ৮০০ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। সে হিসাবে শতকরা ৯২ ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মঙ্গলবার ইরানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা কিয়ানুশ জাহানপুর সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।
৪ মে থেকে লকডাউন শিথিল হচ্ছে ইতালিতে ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় আগামী ৪ মে থেকে ইতালিতে লকডাউন শিথিল হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোন্তে। তবে একবারে পুরোপুরি না তুলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক ধারাবাহিকভাবে তুলে নেয়া হবে এসব নিষেধাজ্ঞা। মঙ্গলবার ফেসবুকের এক পোস্টে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি যদি বলতে পারতাম, সব খুলে দেয়া হোক। কাল সকাল থেকেই আমরা শুরু করব কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত হবে দায়িত্বহীন।
রাশিয়ায় একদিনে আরও সাড়ে পাঁচ হাজার আক্রান্ত ॥ রাশিয়ায় হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি। এরই মধ্যে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাশিয়ার করোনাভাইরাস রেসপন্স সেন্টার জানিয়েছে, সোমবার দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৬৪২ জন।
ইংল্যান্ডে করোনায় মৃত্যু সরকারী হিসাবের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি ॥ ধীরে ধীরে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে যুক্তরাজ্য। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ইংল্যান্ড ও ওয়েলস। সরকার এ দুটি অঞ্চলে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় যে পরিমাণ মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে মারা গেছে তার চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস জানিয়েছে, তারা ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৩ হাজার ১২১টি মৃত্যু রেকর্ড করেছে।
ডেনমার্কে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা ॥ ডেনমার্ক করোনার বিরুদ্ধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে দেশটিতে ইতোমধ্যেই জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জনসামগমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে।
রমজানে গ্রামে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা ইন্দোনেশিয়ায় ॥ রমজানে শহর থেকে গ্রামে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা এনেছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেছেন, রমজান মাসের শেষে ইন্দোনেশিয়ার মুসলিমরা গণহারে যেভাবে শহর থেকে গ্রামে যান সেটা এবার বাতিল হচ্ছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৭৬০।