কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং নির্বাচনী ইশতেহার পূরণে দলের নেতাদের বিষয়ভিত্তিক দায়িত্ব পালনে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি সারাদেশে দলকে সুসংগঠিত, সম্মেলন হওয়া জেলাগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন এবং আসন্ন পাঁচটি সংসদীয় উপকমিটির নির্বাচনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দল মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্যও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মীদের এমন নির্দেশনা দিয়ে আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে নিয়েই আওয়ামী লীগ চিন্তা ও কাজ করে। দেশের মানুষ কিভাবে একটু ভাল থাকবে সেটাই আমাদের করতে হবে। এজন্য দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতাকর্মীকে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে একটা আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন করে নতুন প্রজন্মের জন্য এটা তৈরি করে দিয়ে যেতে চাই। এটা যেমন আমার দলের (আওয়ামী লীগ) ও আমার উচিত, কাজেই আমরা এভাবেই করে দিতে চাই।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। সেখানে কোথায় কী প্রয়োজন, কি করলে দেশের মানুষ একটু ভাল থাকবেÑ আমাদের মানুষকে নিয়েই চিন্তা, মানুষকে নিয়েই আমাদের কাজ। সেটাই আমাদের করতে হবে। আমি আশাকরি সকলেই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। আমাদের জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই চলতে হবে। তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আমরা পূরণ করতে চাই।
দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, প্রত্যেকের যার যার বিষয়ভিত্তিক দায়িত্বটা পালন করা দরকার। নির্বাচনী ইশতেহারে যে ঘোষণা দিয়েছি, পাশাপাশি আমাদের যে পলিসি আছে, সেগুলো নিয়ে বসে আলোচনা করা। আমরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি, কোনটা কতটুকু করা হয়েছে বা ভবিষ্যতে কতটুকু করব- সেই বিষয়ে আলোচনা করা।
ভার্চুয়াল আলোচনার শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আমাদের সভাপতির একটা গাইডলাইন চাই। আমরা নিজেরা কিছু বিষয় আলোচনা করেছি। এর মধ্যে রয়েছেÑ আমাদের যে সকল জেলা, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে, তাদের আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে আপনার অফিসে (সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়, ধানমন্ডি) পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। আরেকটি হলো- এই সময়ের মধ্যে প্রত্যেক সম্পাদককে চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট উপকমিটি গঠনের রিকমন্ডেশন তৈরি করেছি, সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক আপনি। আর আমরা সীমিত আকারে সাংগঠনিক কর্মসূচী এখন থেকে পালন করার জন্য তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পালন করার জন্য একটি নির্দেশনা দিচ্ছি। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আপনার (শেখ হাসিনা) জন্মদিন। এটা আমরা খুব সীমিত আকারে পালন করব। এটা প্রতিবছরই করে থাকি। আপনি না বললেও করব।’
জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার জন্মদিন পালনের প্রস্তাব আমি গ্রহণ করছি না। জন্মদিন পালনের দরকার নেই। আমি এমনিতেই জন্মদিন পালন করি না। বাকিগুলোর মধ্যে সাব-কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার সিদ্ধান্ত খুবই ভালো। এটা করা উচিত। যাতে সাব-কমিটিগুলো বসতে পারে। বিষয়ভিত্তিক সেমিনার করা, আলোচনা করা। আগামী দিনে আমাদের ভবিষ্যত কর্মসূচী সেগুলো ঠিক করা। সাব কমিটিগুলো এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে সরকার কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল, সেটি ছিল ২০১০ থেকে ২০২০- এই দশ বছর মেয়াদী। আর নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনার মেয়াদ ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। তাই বাংলাদেশকে আমরা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতার দেখা উচিত এবং এখানে বিষয়ভিত্তিক যেটা আছে সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যরা দেখবেন, কীভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
করোনা মহামারীর মধ্যে থমকে যাওয়া দলের সাংগঠনিক তৎপরতা আবার গতিশীল করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। করোনার কারণে অনেক জায়গায় সম্মেলন হলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এখন সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ‘জীবন বাজি’ রেখে মানুষের কল্যাণে কাজ করায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এটাই হচ্ছে আমাদের কাজ। জাতির পিতা আমাদের এটাই শিখিয়েছেন, এটাই তাঁর আদর্শ।
তিনি বলেন, আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি, যদিও যে কর্মসূচীগুলো নিয়েছিলাম তা পালন করতে পারছি না করোনাভাইরাসের কারণে। যদিও আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি, আমরা গাছ লাগাব প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায়। আর দেশের মানুষের পাশে আমরা দাঁড়াব। যাতে গৃহহারা, ভূমিহীন- বিশেষ করে ভূমিহীনদের ভূমি ও গৃহহীনদের আমরা গৃহ নির্মাণ করে দিবো। সেগুলো আমাদের প্রত্যেক অঞ্চলে, এরকম যদি থাকে সেটা খুঁজে বের করতে হবে, দেখতে হবে। আমরা দলের পক্ষ থেকেও অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। তাছাড়া যাদের ভিটে আছে কিন্তু বাড়ি করার টাকা নেই, তাদেরও সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এটাও যাতে যথাযথভাবে হয় সেই ব্যবস্থাটা করতে হবে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের এখনও অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের সংগঠনটাকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে, নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আজকে আমাদের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলার। আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ ভাগ টার্গেট করেছিলাম। এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৭ দশমিক ৮ ভাগ পর্যন্ত অর্জন করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সেটা কমে গেছে।
তিনি বলেন, তারপরও এখনও আমরা একটা ভাল অর্থনৈতিক অবস্থানের মধ্যে আছি। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি সকল ক্ষেত্রে। প্রণোদনা দেয়ার ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডগুলো যথাযথভাবে চলছে। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি, সেখানে আমরা বিনিয়োগ করতে চাই। সেই জন্য আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে আমরা যে এগোচ্ছি, সেটা যাতে যথাযথভাবে কার্যকর হয় সেটা আমাদের দেখতে হবে, নজরদারি বাড়াতে হবে।
শূন্য হওয়া পাঁচটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে একটা উপনির্বাচন আছে। সেই নির্বাচনে জনগণের আস্থা ও বিশ^াস আমাদের ওপর রয়েছে। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের ভোট অনেক বেশি। সেখানে দল ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের প্রতিনিধি যাতে নির্বাচন করেন, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসিকে ঘিরে সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসিটাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। সম্পূর্ণ আধুনিকভাবে টিএসসি প্রতিষ্ঠা করব। এটা ছাত্র-শিক্ষকদের একটা মিলন কেন্দ্র, এটাকে আরও সুন্দরভাবে তৈরি করব সেই নির্দেশ আমি দিয়েছি। সেভাবে নতুন করে ডিজাইন ও প্লান করব। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে কথা বলেছিলাম, আমি জানি বিশ^বিদ্যালয় এটা করতে পারবে না। কাজেই এটার জন্য টাকা পয়সা খরচ লাগে লাগবে।’
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ‘আমিতো এই বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী, জাতির পিতাও এখানের ছাত্র ছিলেন। কাজেই এটা আমরাই করে দিবো। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজটাকেও আমরা খুব সুন্দরভাবে করতে চাই। কারণ এই একটাই জাতীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে সারাদেশ থেকে মানুষ চিকিৎসার জন্য আসে। কাজেই সেখানে যাতে ৫ হাজার রোগীর চিকিৎসা হতে পারে, সেইভাবে এটাকে আমরা নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। পুরনো ঐতিহ্য কিছুটা আমরা ধরে রাখতে পারি সামনের ডিজাইন অনুযায়ী। কিন্তু ভিতরে সম্পূর্ণ আধুনিক একটা হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ আমরা নির্মাণ করব। ইতোমধ্যে সেই প্লান তৈরি করা আছে। সেটার কাজ যাতে দ্রুত হয় তার ব্যবস্থা আমরা করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের আমাদের ঐতিহ্যগুলো রক্ষা করা, মেডিক্যালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, এটাকেও সুন্দরভাবে তৈরি করা, যে ডিজাইন আছে সেটাকে ঠিক রেখে সুন্দরভাবে নির্মাণ করা। শহীদ মিনারের সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, যেখানে আমতলা। সেই আমতলায় দাঁড়িয়ে কিন্তু আমাদের ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু। যেখান ৪৮ সালের ১৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মিটিং করেছিলেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা মর্যাদা দেয়ার জন্য। কাজেই সেই আমতলাটাকেও রক্ষা করা। কাজেই সবকিছু মিলিয়ে করব, সেই নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহ নতুন বিভাগীয় শহর। সেখানে নতুন প্লান কিভাবে হবে সেগুলোর বিষয়ে আমরা বলেছি। আমাদের প্রশাসন ক্যাডারদের ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খুবই পুরনো ও জরাজীর্ণ। সেখানে একটা নতুন প্লান ও নতুন ডিজাইন আমরা করে দিতে চাচ্ছি। সেই সঙ্গে পাবলিক লাইব্রেরিটাকে আরও একটু আধুনিক লাইব্রেরি করতে চাই। আমাদের ঢাকা জাদুঘর, তার পেছনে যে পুকুর যে পুকুর, সামনের ল্যান্ডস্কেপটা এবং পাবলিক লাইব্রেরিটাকে ওইভাবে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন করে নতুন প্রজন্মের জন্য এটা তৈরি করে দিয়ে যেতে চাই। সেই নির্দেশ দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের পুরনো হলগুলো খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। পুকুরগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। সেগুলোকে আবার সংস্কার করা। হলগুলোকে মেরামত করা। নতুনভাবে রং করা এবং সেগুলোকে সংস্কার করে মেরামত করব। সেই নির্দেশনাও আমরা দিয়ে দিয়েছি। এগুলোর জন্য যা যা করার দরকার তা করছি। এটা আমাদের দলেরও জানা উচিত।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, করোনার কারণে সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। তোমরা কাজ করে যাও। আমি সীমিত আকারে ভাগে ভাগে মিটিং করব। প্রথমে একটা সভাপতিমন্ডলীর মিটিং করব। তারপর কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক করব। তারপর উপদেষ্টা পরিষদের মিটিং করব। এগুলো আলাদা আলাদাভাবে মিটিংগুলো করব। এটা আমাদের পার্লামেন্ট সেশনের পরেই আমরা শুরু করব। করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট ক্ষতি করে যাচ্ছে। তারপরও আমরা আমাদের অর্থনীতিকে ধরে রাখতে পারছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এদেশটাকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই এবং আমরা স্বাধীন দেশ, স্বাধীন জাতি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে চাই। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ হোক, বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা সেভাবেই বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে চাই। আজকে তিনি নেই, কিন্তু তাঁর আকাক্সক্ষা পূরণ করা, বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত শিক্ষিত আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে বাঙালি জাতিকে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বÑ এটাই আমাদের লক্ষ্য।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো যেকোন দুঃসময়ে তিনি আমাদের পাশে ছিলেন। আমি এইটুকু অন্তত বলতে পারি, পঁচাত্তরের পর আমরা যখন দিল্লীতে ছিলাম তখন তিনি (প্রণব মুখার্জী) ও তাঁর পরিবার আমাদের দেখাশোনাসহ সব বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন।
প্রতিটি দুঃসময়ে প্রণব মুখার্জীর পাশে থাকার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান আরও বলেন, পরবর্তীতেও বিভিন্ন দুঃসময়ে সবসময় তিনি (প্রণব মুখার্জী) পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিশেষ করে পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যখন বিশ্বব্যাংক লাগলো, ওয়ান ইলেভেনে যখন আমি গ্রেফতার হলাম। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সময়ও তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের পক্ষে ও আমার মুক্তির জন্য অনেক কাজ করেছেন। ভারত সরকারের পাশাপাশি ও প্রণব মুখার্জী নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাছাড়া ১/১১ সময়ে যখন আমি বন্দীখানায় তখনও সবসময় খোঁজ-খবর নিয়েছেন। পদ্মা সেতুর বিষয়েও তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীকে পাশে পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারত আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে, সেখানেও তাঁর ভূমিকা ছিল, আমাদের শরণার্থীদের রাখা। আবার ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পরে যারা আশ্রয় নিয়েছিল তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর অবস্থান শুধু ভারতে না, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর একটা অবস্থান ছিল। আমাদের পাশে তিনি সবসময়ই ছিলেন। তিনি একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, লেখাপড়া জানতেন। তিনি বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের যেকোন দুঃসময়ে তিনি সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন, আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শফিউল ইসলাম চৌধুরী নাদেল, অসীম কুমার উকিল, এডভোকট মৃণাল কান্তি দাস, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, হাবিবুর রহমান সিরাজ, সুজিত রায় নন্দী, আফজাল হোসেন, সেলিম মাহমুদ, রোকেয়া সুলতানা, ওয়াসিকা আয়শা খান, শাম্মী আহমেদ, আবদুস সবুর, হারুন অর রশীদ, আমিনুল ইসলাম আমিন, সায়েম খান, রিয়াজুল কবির কাওছারসহ অন্যরা।