কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে প্লেন চলাচল বন্ধ ও লকডাউনের কারণে বিভিন্ন দেশে আটকে আছেন বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক। এদের মধ্যে অনেকেই ভ্রমণে গিয়ে আর আসতে পারছেন না। কেউবা চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। আবার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী নাগরিক নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না।
করোনা ভাইরাসের কারণে অদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সরকার থেকে একে একে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্লেন যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন শুধু চীনের সঙ্গে প্লেন যোগাযোগ চালু রয়েছে। আবার বিভিন্ন দেশে দেশ চলছে লকডাউন । সে কারণে বিদেশ থেকে কেউ এখন আর ফিরতে পারছেন না।
সূত্র জানায়, বর্তমানে ভারতে গিয়ে প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশি নাগরিক আটকে আছেন। এসব নাগরিক ভারতে ভ্রমণ, চিকিৎসা, তাবলিগ জামাত ইত্যাদি কারণে সে দেশে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছেন। অবশ্য ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের তালিকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ভারতে ১৪ এপ্রিল লকডাউন শেষ হলে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু ওই লকডাউনের সময়সীমা আগামী ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সে কারণে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। এখন বিশেষ ফ্লাইটে কীভাবে তাদের আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ইত্যাদি দেশেও অনেক বাংলাদেশি নাগরিক আটকে রয়েছেন। একইসঙ্গে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গিয়েও ফিরতে পারছেন না অনেক বাংলাদেশি।
করোনা ভাইরাসের কারণে প্লেন যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও এখন বিশেষ ফ্লাইটে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যেই সৌদি আরব থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ৩৬৬ জনকে ফেরানো হয়েছে। এদের মধ্যে ১৩২ জন নাগরিক সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন।
ভারত থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আগামী সপ্তাহে কলকাতা ও চেন্নাইতে কয়েকটি বিশেষ ফ্লাইট পাঠানো হবে। এসব ফ্লাইটে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি ঢাকায় ফিরবেন। আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল প্রতিদিন চেন্নাই থেকে বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় আসবে। আর ২১ ও ২৩ এপ্রিল কলকাতা থেকে ঢাকায় দুইটি বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশিরা আসবেন। এদিকে, থাইল্যান্ডে আটকে পড়া ৪৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক বিশেষ ফ্লাইটে ১৭ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার কথা। এরমধ্যে ওই ফ্লাইটে একটি মরদেহও রয়েছে।
আটকে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইতোমধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্লেন সংস্থার সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ধীরে ধীরে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন মন্ত্রী।