দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো নয়। নানা কারসাজির আভাস মিলছে। তারই মধ্যে আরেকটি খারাপ সপ্তাহ পার করল বাংলাদেশের পুঁজািবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেনে তিন দিনই সূচক পড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লেনদেনও কমেছে।
জানুয়ারিতে বড় ধসের পর পুঁজিবাজার জাগাতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেওয়ার পর থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। টানা কয়েক দিন লেনদেনের পাশাপাশি সূচকও বাড়ে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষের দিক থেকে বাজারে ফের লেনদেন ও সূচক কমতে শুরু করে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, এই মন্দা বাজারেও লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে ‘মন্দ’ একাধিক কোম্পানির শেয়ারের দর। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরাই অবাক। এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কখনো বেঁধে দেওয়া সীমা বা সার্কিট ব্রেকার পর্যন্ত বাড়ছে। কেন বাড়ছে কেউ জানে না। শুধু এমন দু-একটি কোম্পানি নয়, উৎপাদনে নেই কিংবা লোকসানে রয়েছে এমন দুই ডজন কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার পর্যদস্ত হলেও লোকসানি কোম্পানির দাপট বাড়ছে। লোকসানে থাকা কোম্পানির আর্থিক কোনো উন্নতি না হলেও শেয়ারের দামে ঊর্ধ্বগতি।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, লোকসানি কোম্পানির আর্থিক কোনো উন্নতি না হলেও একটি গোষ্ঠী কারসাজি করে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ায়। কখনো আর্থিক উন্নতি কিংবা কখনো কোম্পানির পর্ষদের পরিবর্তন, আবার কখনো বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগ আসছে এমন গুজব ছড়িয়ে শেয়ার দাম প্রভাবিত করে। তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে বিনিয়োগকারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়লে শেয়ার দাম বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে জেনে-শুনে-বুঝে বিনিয়োগের পরামর্শ বাজারসংশ্লিষ্টদের। তাঁদের মতে, বাজার বাড়লে দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দামও বাড়তে থাকে। উঠতি বাজারে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী ফায়দা লুটতে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ায়। বিনিয়োগকারী সেই তথ্যে প্রভাবিত হয়ে শেয়ার কিনে ঠকে। নিজের বিনিয়োগ সুরক্ষা করতে রাতারাতি মুনাফার আশা বাদ দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে জেনে-শুনে ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার পরামর্শ বাজার বিশেষজ্ঞদের।