একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জ হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ সরকার নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় শহীদ জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাঁধের কাজের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বাস্তব চিত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ‘সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়।
লিখিত বক্তব্য তিনি উল্লেখ করেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা আমাদের সকল উপজেলা কমিটি ও আপনাদের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী নিশ্চিত হয়েছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করা হয়নি। আমরা শুরু থেকেই আশঙ্কা করছিলাম এবারও সঠিক সময়ে কাজ শেষ হবে না। তাই প্রমাণিত হলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায় ২৮ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আমদের বিভিন্ন উপজেলা কমিটির কাছ থেকে খোজ নিয়ে যা জেনেছি এবং কৃষকরা দাবি করেছেন কাজ হয়েছে ৫০-৬০ ভাগ। তবে কোথাও কোথাও ৩০ ভাগও হয়নি। গত ২০ ফেব্র“য়ারি একটি বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। এটা কবে শেষ হবে আমরা জানিনা। হাওরে অনেক অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মান করে সরকারী অর্থ আত্মসাতের পায়তারাও চলছে।
আমাদের দাবি ছিলো প্রকাশ্যে সমাবেশের মাধ্যমে পিআইসি গঠন করার জন্য। তিনি আমাদের দাবি মানলেন না। তাদের খেয়াল খুশি মতো ইউএনও কার্যালয়ে বসে পিআইসি গঠন করা হয়। সঠিক সময়ে কাজ শুরু হলো না, শেষও হলো না। এবার হাওর রক্ষা বাঁধে সবচেয়ে বেশী অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে দিরাই-শাল্লা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদরে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু এবং শেষের ব্যাপারে প্রশাসদের তৎপরতা না থকালেও কাজের শেষ সময়ে এস তারা তৎপর হয়ে উঠছেন, গত তিন দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার পিআইসি সভাপসিদের গ্রেফতারের হিড়িক পড়েছে আমরা মনে করি এটা প্রশাসন নিজকে ধায় মুক্তি করার জন্য করছে। কাজ শুরু থেকে পিআইসিকে চাপে রাখলে ২৮ ফেব্র“য়ারির আগেই কাজ শেষ হয়ে যেতো। আমরা বলে দিতে চাই হাওরের কোন বিপর্যয় হলে এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা সুনামগঞ্জের কৃষকদের নিয়ে প্রয়োজনে পাউবো অফিস, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেবো। আদালতে মামলা করবো, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমরা লক্ষ্য করছি কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন উপজেলায় পিআইসি সভাপতি/সদস্য সচিবকে আটক করে মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হচ্ছে। কাজের শেষ সময়ে এসে এসব কেন? এখনতো প্রশাসনের উচিত আনুষ্ঠানিক ভাবে বাঁধের কাজ শেষ ঘোষণা করা। এগুলো সময় বাড়ানো এবং নিজেদের উপর থেকে দায় সরানোর পাঁয়তারা কি না? আমরা তাদের স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যথাযত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার ফলে হাওর ডুবি হলে এর দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। পাউবোর অগ্রগতি প্রতিবেদনেও হাওরের কাজের সঙ্গে কোন মিল নেই।