গতকাল চেম্বার কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (স্কিটি) ও সিলেট চেম্বার এর যৌথ উদ্যোগে “নতুন ব্যবসায় অর্থায়ন” শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে সফল হওয়ার জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অনস্বীকার্য। সঠিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বেশীরভাগ অভিভাবকরা চান তাদের সন্তান লেখাপড়া করে বড় চাকুরী করুক। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শুধু চাকুরী করে সকলের পক্ষে সফল হওয়া সম্ভব নয়। চাকুরী করার মন মানসিকতা থেকে বের হয়ে এসে চাকুরী দেওয়ার মন মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যবসা করতে হলে বড় পুঁজির প্রয়োজন এই ধারণাটি সত্য নয়। এক্ষেত্রে সঠিক আইডিয়া এবং ইচ্ছাই মুখ্য। উদাহরণস্বরূপ তিনি উবার, অ্যামাজন, আলীবাবা সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানীর নাম উল্লেখ করেন যেগুলোর উৎপত্তির মূলে রয়েছে সঠিক আইডিয়া ও প্রচেষ্টা। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের কৃষি জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে চেম্বার সভাপতির প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর কৃষি জমি ১% করে কমছে। যেটি ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০০ বছরে ১০০% কৃষি জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সেজন্য বর্তমান সরকার কৃষি জমি অকৃষি খাতে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন, তবে নগরায়নের স্বার্থে জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে সীমিত আকারে অকৃষি খাতে কৃষি জমি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি সহজীকরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, সিলেট চেম্বার ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। এ লক্ষ্যে সিলেট চেম্বার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার সাথে সারা বছরব্যাপী সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজন করে থাকে। এসব প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে নবীন উদ্যোক্তাগণ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন কৌশলগত দিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। তিনি বলেন, সিলেটে শিল্প খাতের বিকাশের লক্ষ্যে বিসিক শিল্প নগরী সম্প্রসারণ ও বিসিকের খালি প্লটগুলো আগ্রহী উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি বিসিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে এগিয়ে আসার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদনে নতুন উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে দেশ খাদ্যে স্বনির্ভর হবে এবং সেই সাথে উদ্যোক্তারাও দারুণভাবে লাভবান হবেন। তিনি ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগদানের জন্য প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
বিসিক সিলেট এর ডিজিএম বখতিয়ার উদ্দিন আহমদ “নতুন ব্যবসায় অর্থায়ন” শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সিলেট চেম্বারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোক্তাগণকে আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি