কাজিরবাজার ডেস্ক :
চীন থেকে আসা ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, চীন থেকে আসা সকল যাত্রীর ‘হেলথ স্ক্রিনিং’ হচ্ছে বিমানবন্দরে। সর্দি-জ্বরসহ সন্দেহজনক উপসর্গ থাকা যাত্রীদের পরীক্ষা করছে আইইডিসিআর। সম্প্রতি সময়ে চীন থেকে আসা এরকম মোট ৪৩ জনের রক্ত ও লালার নমুনা পরীক্ষা করে কারও মধ্যেই করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার আইইডিসিআর ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। ভাইরাস শনাক্ত করার বিষয়ে অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এ ধরনের ক্ষেত্রে তারা পলিমারেজ চেইন রি-অ্যাকশন (পিসিআর) পরীক্ষা করে নিশ্চিত হচ্ছেন। তারপর নিয়মানুযায়ী ওই নমুনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পাঠানো হচ্ছে পুনঃপরীক্ষার জন্য। বাংলাদেশে পিসিআর পরীক্ষার সুযোগ আছে কেবল আইইডিসিআরে। সে কারণে কারও মধ্যে সংক্রমণের সন্দেহ দেখা গেলে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আরও বলেন, ভাইরাস অন্য দেশে ছড়াতে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করেছে। বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে ৩১২ জনকে চীনের উহান শহর থেকে ফিরিয়ে এনে ঢাকায় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। এ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর উপসর্গ প্রকাশ পেতে এক থেকে ১৪ দিন সময় লাগতে পারে। সে কারণে উহান ফেরতদের অন্তত ১৪ দিন পরীক্ষা করা হবে। তাদের মধ্যে দুজনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, দুজনের মধ্যে একজনের জ্বর, আরেকজনের মাথাব্যথা থাকায় তাকেও গত সোমবার কুর্মিটোলায় আনা হয়েছে। যদিও করোনা ভাইরাসের লক্ষণ বা উপসর্গের মধ্যে পড়ে না, তারপরও আমরা সতর্কতা হিসেবে তাকে এখানে রেখেছি। দুজন এখন ভাল আছেন, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চলছে।
গত শনিবার দেশে ফেরা ওই বাংলাদেশীদের মধ্যে তিন পরিবারের আটজন আছেন সিএমএইচে। বাকিদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তারা সবাই ভাল আছেন বলে জানান আইইডিসিআরের পরিচালক।
করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ আক্রান্ত হলে আইইডিসিআর তাকে দ্রুত অন্যদের থেকে আলাদা করে ফেলার কৌশল নিয়েছে, যাতে তার কাছ থেকে ভাইরাসটি অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। এর অংশ হিসেবেই চীন ফেরতদের ক্যাম্পে রেখেছি। তিনি আরও বলেন, আশকোনা হাজী ক্যাম্পে অবস্থানরত সবাই সুস্থ আছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিকিৎসকগণ ক্যাম্পে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং আশকোনা হাজী ক্যাম্পে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত খাবার ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।