স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট নগরী ও শহরতলীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দির, আখড়া ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যারদেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পূজার মন্ডপগুলোতে অংশ নিতে ভিড় জমান সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বস্তরের পুণ্যার্থীরা। পূজা উপলক্ষে প্রতিটি মন্ডপে স্থাপন করা হয় সরস্বতী প্রতিমা। এ উপলক্ষে গতকাল বন্ধ ছিল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর প্রতিমা শোভা যাত্রায় অংশ নিবেন পূণ্যার্থীরা।
গতকাল ভোর ৫টায় প্রতিমা স্থাপন, সকাল ৮টায় পূজারম্ভ, ৯টায় পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়েছে এবং দুপুর ১২টা থেকে প্রসাদ বিতরণ শুরু হয়। অন্যদিকে সরস্বতী পূজা মন্ডপগুলোতে সন্ধ্যা ৬টা সন্ধ্যা আরতি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর কোথাও কোন অঘটনের খবর পাওয়া যায়নি। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবীরা নিরাপত্তায়ও নিয়োজিত ছিলেন।
শাবির পূজা মন্ডপে পূজা দিতে আসা লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নির্ণয় রয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্বজনীন স্থান। এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ না করার শিক্ষাই এ পূজা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দেশের প্রতিটি মানুষ অসাম্প্রদায়িকতা, অজ্ঞানতার অন্ধকার আর অকল্যাণকর সকল বাধা পেরিয়ে একটি উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য বলেন, অত্যন্ত সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপিত হয়েছে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার পূজার সংখ্যা বেড়েছে। তাতেই মনে হচ্ছে পূজার প্রতি সবার আগ্রহটা আরো বাড়ছে। তিনি বলেন, পূজার মন্ডপগুলো ছোট ছোট না করে যদি সবাই মিলে দু’একটি পূজার মন্ডপ করতো তাইলে ঝাঁকজমক হয়ে পূজার আনন্দটা আরো বেশি উপভোগ করা যেতো।
কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার বলেন, আমরা মনে করি এই পূজার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে কোনো ধরনের ধর্মীয় বিদ্বেষ থাকতে পারে না। এই পূজার মাধ্যমে আমরা বিদ্যাদেবীর যে আদর্শ তাই প্রত্যাশা করি। যেন আমরা বিদ্যা অর্জনে দেবী সরস্বতীর আদর্শকে অনুসরণ করতে পারি।