কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারতের চতুর্থ রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে। এর আগে কেরালা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে। ভবিষ্যতে তেলঙ্গানা রাজ্যেও সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী।
দেশটির সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ জানায়, সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রস্তাবে বলা হয়, ধর্মের ভিত্তিতে এ আইন তৈরি হয়েছে। সেকারণে সিএএ-র বিরোধিতা করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের বাম ও কংগ্রেস আগেই জানিয়েছিল, তারা সিএএ বিরোধী প্রস্তাব সমর্থন করবে। পরে তাদের সমর্থনেই প্রস্তাবটি বিধানসভায় পাস হয়।
বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘আমাদের রাজ্যে সিএএ, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি (এনপিআর) করার অনুমতি দেব না। মানুষ আতঙ্কে আছেন। সব ধরনের নথির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রান হচ্ছেন। এ লড়াই শুধু সংখ্যালঘুদের না। আমার হিন্দু ভাই-বোনেদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, ওরা সামনে থেকে এ লড়াইটা লড়ছেন।”
শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন জারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। তাছাড়া, নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, “সিএএ অনুযায়ী মানুষ বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত হবেন। এটি ভয়ঙ্কর খেলা। তাই ওদের (বিজেপি) ফাঁদে পা দেবেন না।”
গত ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তবে মুসলিমরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
এর আগে বিলের প্রতিবাদে মমতা বলেছিলেন, ‘ক্ষমতাসীন বিজেপির উদ্দেশ্যে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে দাঙ্গার মাধ্যমে লাভের রাস্তা বের করা। যদি আমার ওপর ভরসা থাকে তবে জেনে রাখুন ‘ক্যাব’ করতে হলে আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে ওদের ক্যাব আর এনআরসি করতে হবে, তা না হলে করা যাবে না।’
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আমার লাশের ওপর দিয়ে কার্যকরী করতে হবে ঐ আইনে। পশ্চিমবঙ্গে সরকার ফেলে দিয়ে যদি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির চেষ্টাও হয়, তা হলেও পিছু হটবো না।’
বিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির সংবিধানের সেক্যুলার চেতনার সঙ্গে সিএএ সাংঘর্ষিক বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।