সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় খুলনার

9

ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দারুণ একটি ম্যাচ উপভোগ করল ক্রিকেটপ্রেমীরা। নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ল খুলনা টাইগার্স। বিপিএলে শনিবার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ঢাকার দেয়া ২০৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জয় পেল ঢাকা। ৫৭ বলে ৮টি চার ও সাতটি ছক্কার সাহায্যে ১১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন শান্ত।
এবারের বিপিএলে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসাবে সেঞ্চুরি করলেন শান্ত। এর আগে সেঞ্চুরি করেছিলেন সিলেট থান্ডারের আন্দ্রে ফ্লেচার ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ডেভিড মালান। আর বিপিএলের ইতিহাসে শান্তর সেঞ্চুরিটি ২১তম। বিপিএলের ইতিহাসে পঞ্চম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসাবে সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত। টি-টোয়েন্টিতে এর আগে শান্তর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল ৫৪ রান। এই ম্যাচে সেই রেকর্ডকে ছাড়িয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন তিনি।
বিপিএলে এর আগে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি ছিল সিলেট রয়্যালসের। ২০১৩ সালে মিরপুরে রংপুর রাইডার্সের দেয়া ১৯৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করে ৬ উইকেটে জয় পেয়েছিল সিলেট। এবারের আসরে সেই রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেল খুলনা।
এই জয়ের ফলে লিগ পর্ব শেষে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকল খুলনা। আর ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে থাকল ঢাকা। সাত দলের অংশগ্রহণে শুরু বিপিএলে প্লে-অফে উঠেছে খুলনা টাইগার্স, রাজশাহী রয়্যালস, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ঢাকা প্লাটুন। বাদ পড়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স, রংপুর রেঞ্জার্স ও সিলেট থান্ডার।
বড় সংগ্রহ সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকে খুলনা। পাওয়াওপ্লেতে বিনা উইকেটে ৬০ রান সংগ্রহ করে তারা। ইনিংসের সপ্তম ওভারে মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান মিরাজ। ২৫ বলে সাতটি চার ও একটি ছক্কায় মিরাজ করেন ৪৫ রান। এরপর রুশো নেমে ১৭ বলে ২৩ করে বিদায় নেন। পরে শান্তর সঙ্গে জুটি বেঁধে ম্যাচ শেষ করে আসেন মুশফিক। ২৭ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করার পর ৫১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন শান্ত।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল ঢাকার। এরপর যেন খুলনার বোলারদের উপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান মুমিনুল ও মেহেদী। তাদের দুজনের ১৫৩ রানের জুটির উপর ভর করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ঢাকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৫ রান সংগ্রহ করে ঢাকা প্লাটুন।
দলের পক্ষে ওপেনার মুমিনুল হক ৫৯ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৯১ করেন। যেকোনো ধরনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুমিনুলের এটি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আর ৩৬ বলে ৩টি চার ও পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে ৬৮ করে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান। টি-টোয়েন্টিতে মেহেদীরও এটি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। খুলনার বোলারদের মধ্যে রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ২টি, শফিউল ইসলাম ১টি ও মোহাম্মদ আমির ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৮ উইকেটে জয়ী খুলনা টাইগার্স।
ঢাকা প্লাটুন ইনিংস: ২০৫/৪ (২০ ওভার)
(তামিম ১, মুমিনুল ৯১, এনামুল ১০, জাকের আলী ১৪, মেহেদী হাসান ৬৮*, থিসারা ৬*; মোহাম্মদ আমির ১/৩৫, ফ্রাইলিঙ্ক ২/৩৫, শহীদুল ০/৩৭, শফিউল ১/৫০, মিরাজ ০/২২, আমিনুল ০/২১)।
খুলনা টাইগার্স ইনিংস: ২০৭/২ (১৮.১ ওভার)
(শান্ত ১১৫, মিরাজ ৪৫, রুশো ২৩, মুশফিক ১৮*; মেহেদী হাসান ১/৩৯, মাশরাফি ০/২৬, ফাহিম আশরাফ ০/৪৭, হাসান মাহমুদ ০/৪৩, শাদব খান ১/৩২, থিসারা পেরেরা ০/২০)।
ম্যাচ সেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত (খুলনা টাইগার্স)।