কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবসরে গেলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। সংবিধান অনুসারে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় বুধবার (৮ জানুয়ারি) শেষ কর্মদিবস পালন শেষে অবসরে যান তিনি। প্রথা অনুসারে এ সময় তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আইনজীবীদের সংবর্ধনার জবাবে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, আমার ভুলগুলো ভুলে যেতে অনুরোধ করছি। তবে আমাকে ভুলে যাবেন না।
বিদায়ী সংবর্ধনায় আদালত কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানান। এ সময় বক্তারা উচ্চ আদালতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর ১৫ বছরের কর্মময় জীবনের তাৎপর্যপূর্ণ দিক তুলে ধরেন।
সদ্য অবসরে যাওয়া হাইকোর্টের এই বিচারপতি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন। তিনি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্ট) সংক্রান্ত মামলার রায়, নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা এবং নদী দখলকারীদের সব নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা ও দেশের কোনও ব্যাংক থেকে তাদের ঋণ না দেওয়া, কিডনিসহ মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন, প্রসার বৃদ্ধিসহ জনস্বার্থ ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রিটের রায় দিয়েছেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সিলেট জেলার কোতোয়ালি থানার বিলপার লামাবাজার গ্রামে ১৯৫৩ সালের ৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আবদুল ফাত্তাহ চৌধুরী ও মাতা মরহুম রওনোক আরা বেগম। তিনি ১৯৬৮ সালে এসএসসি ও ১৯৭০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) ও এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮২ সালের ১৭ মার্চ সহকারী জজ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালের ১ মার্চ তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট তাকে দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২০০৬ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। সেই থেকে আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিনি হাইকোর্টে বিচারকার্য পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।