ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক কিশোর গুরুতর আহত হওয়ায় ঘটনায় মহাসড়ক অবরোধ করে থানা হেফাজতে থাকা ঘাতক বাস চালককে ছাড়িয়ে নিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। শনিবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে পোনে ৯টা পর্যন্ত প্রায় পোনে এক ঘন্টার ব্যাপী অবরোধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এক অংশে দুরপাল্লার শতশত যান আটকা পড়ে। এ সময় যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জানা যায়,শনিবার বিকালে এনা পরিবহনের ঢাকাগামী একটি বাস দয়ামীর এলাকায় আরিফুল ইসলাম চৌধুরী (১৪) নামের এক কিশোরকে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনার এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়লে চালক বাসসহ ওসমানীনগর থানা কম্পার্টমেন্টে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে তামাবিল হাইওয়ে পুলিশ ওসমানীনগর থানায় পৌঁছে চালককে থানা পুলিশের জিম্মায় দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার দিকে এনা পরিবহনের একটি যাত্রীহিন বাস দিয়ে মহাসড়ক ব্যারিকেট দিয়ে উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকায় অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকরা। চালকের মুক্তির দাবিতে তাদের পোনে এক ঘন্টার ব্যাপী অবরোধে এম্বুলেন্সসহ দুরপাল্লার শতশত যান মহাসড়কের উভয় পাশে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। পরবর্তীতে মামলা বা লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় থানা হেফাজতে থাকা ঘাতক বাস চালককে থানা পুলিশ পরিবহন শ্রমিক নেতাদের জিম্মায় ছেড়ে দেয় বলে জানা গেছে।
অবরোধে আটকে পড়া বাস যাত্রী প্রফেসর হান্নান আলীসহ অনেকেই জানান, কি জঘন্য পরিস্থিতিতে বাস করছি আমরা। চালক দুর্ঘটনা ঘটালে কোথায় আহতকে ক্ষতিপূরণ দেবে বাস কর্তৃপক্ষ। তা না করে তারা চালকের মুক্তির জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখে! সরকারের আইন কি শ্রমিকদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারে না? সাধারণ মানুষ কি এভাবে পরিবহন চালক-শ্রমিকদের কাছে অসহায় থেকে যাবে?
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মাঈন উদ্দিন দুর্ঘটনা ও মহাসড়ক অীবরোধের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। চালক থানা হেফাজতে থাকলেও এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় পরবর্তীতে হাইওয়ে পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিক নেতারা চালককে তাদের জিম্মায় নিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
তামাবিল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ আলী মাহমুদ বলেন,দয়ামীরের দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও চালক ওসমানীনগর থানা পুলিশের হেফাজতে ছিল। এ ব্যাপারে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। রাতে পরিবহন শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ না থাকায় থানা হেফাজতে থাকা চালককে পরবর্তীতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন বলে জানান।