১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৫ কোটি ৩১ লাখ নতুন বই বিতরণ

18

কাজিরবাজার ডেস্ক :
২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারিভাবে বিনামূল্যে বিতরণের সব বই সংশ্লিষ্ট স্কুলে পৌঁছে গেছে। ১ জানুয়ারি ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’-এর মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে। বছরের প্রথম দিন সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে বই উৎসব উদ্বোধন করবেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাভারের অধন চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেবেন।
শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘৬৪ জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে নতুন বই পৌঁছে গেছে। ১ জানুয়ারি বই উৎসবের দিন শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী সকালে বই উৎসব উদ্বোধন করবেন।’
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ফতেপুর বাউসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন জানান, বেশ কয়েকদিন আগেই স্কুলে বই নিয়ে আসা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ই নির্ধারিত সময়ের আগে বই পেয়ে গেছে।’
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে (২০২০) প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৩৭৫ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার নতুন বছরের শুরুতেই সারাদেশে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করে আসছে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত মোট ২৯৬ কোটি সাত লাখ ৮৯ হাজার ১৭২টি বই বিতরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১শ’ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রাথমিক স্তরের বই ছাপাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরসহ অন্য বই ছাপাতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে গত বছর বই ছাপতে সরকারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছিল। এবার সিন্ডিকেট কিছুটা ভেঙে দেওয়ায় সরকারের প্রায় শত কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘প্রতিযোগিতার কারণে এবার ১০০ কোটি টাকা খরচ কম হয়েছে। বইয়ের মান ভালো হয়েছে। অসৎ মুদ্রাকররা নিম্নমানের বই ছাপার সুযোগ পায়নি। এবার ভালোভাবেই বই ছাপানো ও তৃণমূল পর্যায়ে বই পৌঁছে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, এবারও কিছু অসাধু মুদ্রাকর নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর অপচেষ্টা করেছে। নিম্নমানের কাগজ দিয়ে ছাপানোর ঘটনায় হাতেনাতে ধরাও পড়েছেন অনেক অসাধু ব্যবসায়ী। এনসিটিবি ও মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে ধরা পড়েছে অন্তত ১৮ প্রতিষ্ঠান। বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন কাগজ। নিম্নমানের ছাপানো কাগজ, মলাট ও ভুলে ভরা ছবিসহ নানা কারণে কেটে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পড়ার অযোগ্য এক লাখ কপি বই। এছাড়া কাগজ ও ছাপার মান ভালো না হওয়ায় আরও ৬০ লাখ কপি বই গ্রহণ করা হয়নি। অনিয়মের দায়ে শাস্তির মুখে পড়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান।