নাশকতা রুখতে হবে

6

দেশের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ স্থাপনে পদ্মা সেতু এক অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্ম দিয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন, দূরত্ব সঙ্কটে নিপতিত মানুষের মনোজগতের গতি ও স্বস্তি এনে দেয়ায় পদ্মা সেতুর ভূমিকা সুবিশাল। স্বাধীন দেশে এমন একটি সেতু নির্মাণ করতে অর্ধশতাব্দীকাল লেগে গেছে। মানুষের কল্যাণই প্রধান বিবেচ্য হলে এমন একটি সেতু নিশ্চয়ই আমরা আরও অনেক আগেই পেতাম। একমাত্র তৃণমূলভিত্তিক মানুষের জন্য রাজনীতি করা দল আওয়ামী লীগের পক্ষেই এমন জনকল্যাণমূলক দীর্ঘস্থায়ী বিরাট কাজ করা সম্ভব। নিজেদের আখের গোছানো দেশের সম্পদ লুটেপুটে খাওয়া তথাকথিত দলের পক্ষে এটি কস্মিনকালেও সম্ভব হতো না।
পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতুই নয়, এটি দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থাপনাও। এটি পরিবর্তিত অদম্য অগ্রসর বাংলাদেশের মহামূল্যবান সম্পদ। ত্রিশ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এ সম্পদকে রক্ষা করতে হবে আমাদেরই। যারা দেশের মঙ্গল চায় না, বাংলাদেশে বসবাস করেও যাদের অন্তরে পাকিস্তান, যারা সর্বোচ্চ বিরোধিতা করেছে পদ্মা সেতু নির্মাণের তারা কোন না কোনভাবে এটিকে কালিমালিপ্ত করতে চাইবেই। আক্ষরিক অর্থেও এই সেতুর ক্ষতি করতে চাইবে। তাই পদ্মা সেতুকে ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না। পদ্মা সেতু সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার প্রথম দিনই আমরা দেখলাম কায়দা করে সেতুর রেলিংয়ের নাটবল্টু খুলে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের তথা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করারই সমতুল্য। মানুষকে বিভ্রান্ত করা, আমজনতার ভেতর হাস্যরসের জোগান দিয়ে সুমহান মহামূল্যবান অগ্রগতির স্মারক পদ্মা সেতুকে লঘু করে দেখানোর অপচেষ্টারই নামান্তর। বিএনপি নেত্রী নিজেই পদ্মা সেতু সম্পর্কে একেবারে শুরুর দিকে কুৎসা রটিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সেতুতে উঠবেন না, এটি ভেঙ্গে পড়বে। পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের আপাততুচ্ছ নাটবল্টু খুলে বিএনপি নেত্রীর সেই অপপ্রচারকেই সত্য বলে প্রতীয়মান করার প্রয়াস নিল তাদেরই অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের প্রাক্তন এক কর্মী। আবার এই ঘটনাটিকে ফলাও করে প্রচারও করা হলো বিএনপির ওয়েবসাইটে। জ্ঞানী লোকের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। এতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, বিএনপির গাত্রদাহ থেকেই নাটবল্টুর নাটক সাজানো। আমরা মনে করি এটিই শেষ নয়, বরং শুরু।
শুধু সেতুর উপরিভাগেই নয়, পানির সমতলে ও পানির নিচেও নাশকতার উদ্যোগ নেয়া হতে পারে। তাই সবার আগে সেতুর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পদ্মা সেতুর গায়ে যেন কোন আঁচড় না পড়ে, হাতুড়ি শাবলের ঘা কিংবা বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার- সব রকম অপতৎপরতা ও নাশকতার প্রচেষ্টাকে রুখতে হবে সর্বাগ্রে।