স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রথমবার গোলাপি বলের টেস্ট খেলতে নেমে ভারতীয় পেসারদের তোপে দিশেহারা বাংলাদেশ। কলকাতা টেস্টের প্রথম দিন বাজেভাবে কেটেছে মুমিনুল হকদের। নিজেরা চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি টাইগাররা। স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন।
ইডেন গার্ডেনে শুক্রবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দিবারাত্রির টেস্ট। এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩০.৩ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরে ভারত ব্যাটিংয়ে নামে। দিন শেষে বিরাট কোহলিদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৭৪ রান। অর্থাৎ, প্রথম দিন শেষে স্বাগতিকদের লিড ৬৮ রান।
দিন শেষে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ৫৫ রান করে আউট হন চেতেশ্বর পূজারা। ১৪ রান করে আউট হন আগারওয়াল। ২১ রানে আউট হন রোহিত শর্মা। ২২ বলে ২৩ করে অপরাজিত থাকেন অজিঙ্কা রাহানে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আল-আমিন হোসেন ১টি ও ইবাদত হোসেন ২টি করে উইকেট নেন।
সিরিজের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা আগারওয়ালকে এই ম্যাচে বাড়তে দেননি আল-আমিন। স্বাগতিকদের দলীয় রান যখন ২৬ তখন এই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন তিনি। স্লিপে মিরাজের হাতে ক্যাচ হন আগারওয়াল। আগারওয়ালকে ফেরালেও রোহিতের ক্যাচ মিস করেছিলেন আল-আমিন। কিন্তু দ্রুতই আল-আমিনের এই বেদনা ভোলান ইবাদত হোসেন। রোহিতকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ইবাদত। এরপর ৯৪ রানের জুটি গড়েন কোহলি ও পূজারা। দলীয় ১৩৭ রানে ইবাদতের বলে স্লিপে সাদমানের হাতে ক্যাচ হন পূজারা।
অন্যদিকে, দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৭৩ রান। দ্বিতীয় সেশনে দ্রুতই পড়ে যায় বাকি উইকেটগুলো। বাংলাদেশের ১০টি উইকেটের ১০টিই নেন ভারতীয় পেসাররা। ইশান্ত শর্মা ৫টি, উমেশ যাদব ৩টি ও মোহাম্মদ শামি ২টি করে উইকেট নেন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সাদমান ইসলামের। ২৯ রান করেন তিনি। ২৪ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হন লিটন দাস।
গোলাপি বলে এদিন প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে দেখেশুনেই খেলছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাস ও ইমরুল কায়েস। ৬ ওভার পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নই ছিলেন তারা। তবে সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হন ইমরুল। ৪ রান করে ফিরেন তিনি।
দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপে ধস নামে। ৬০ রানের মধ্যে ছয় ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরেন। অধিনায়ক মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিথুন, মুশফিকুর রহিম শূন্য রান করে ফিরেন। সাদমান ২৯ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৬ রান করে আউট হন। ২৪ রানে আহত অবসর নেন লিটন দাস। দ্বিতীয় সেশনে দ্রুতই ফিরে যান ইবাদত, মিরাজ ও নাঈম।
তবে, বৃহস্পতিবার ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামির বাউন্সারে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এই ম্যাচ থেকেই ছিটকে গিয়েছেন লিটন দাস ও নাঈম হাসান। ‘কনকাশন সাব’ নিয়ম অনুযায়ী লিটনের পরিবর্তে মিরাজকে ও নাঈমের পরিবর্তে তাইজুল ইসলামকে একাদশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রথম দিন শেষে ৬৮ রানের লিডে ভারত।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৬ (৩০.৩ ওভার)
(সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিথুন ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন ২৪, নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ ৮, আল-আমিন ১*, রাহি ০; ইশান্ত ৫/২২, উমেশ ৩/২৯, শামি ২/৩৬, জাদেজা ০/৫)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ১৭৪/৩* (৪৬ ওভার)
(আগারওয়াল ১৪, রোহিত ২১, পূজারা ৫৫, কোহলি ৫৯*, রাহানে ২৩*; আল-আমিন ১/৪৯, রাহি ০/৪০, ইবাদত ২/৬১, তাইজুল ০/২৩)।