কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগের সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবারের আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনে কোন বিদেশী অতিথি থাকছেন না বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সম্মেলন প্রস্তুতি অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম।
কারণ ব্যাখ্যা করে ১৪ দলের এই মুখপাত্র বলেন, যেহেতু আগামী বছরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বিষয় রয়েছে, সেখানে আমরা বছরজুড়ে নানা আয়োজনে বিদেশী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাব। তাই এবারের সম্মেলনে আলাদা করে কোন বিদেশী অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তবে দেশেই বিভিন্ন দূতাবাসে যারা রয়েছেন, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা উপ-কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মোহাম্মদ নাসিমকে আহ্বায়ক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে সদস্য সচিব করে এ অভ্যর্থনা উপ-কমিটি গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, সামনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এবং সংগঠনকে গতিশীল করতেই এবারের সম্মেলন। জনগণই আমাদের শক্তি, জনগণই আমাদের শক্তির উৎস্য। এ ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের মানুষের ওপর যে তান্ডব চালিয়েছে, যে অপকর্ম করেছে, এখন তার ফল ভোগ করছে। পাপের ফল ভোগ করছে। কথায় আছে- পাপ বাপরেও ছাড়ে না। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জেল খাটছেন। এরা ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তাই বিএনপির মুখে আওয়ামী লীগ নিয়ে সমালোচনা মানায় না। আর যাই হোক দুর্নীতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের মুখে শোভা পায় না।
‘দুর্নীতির কারণে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যাবে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই একমাত্র নেত্রী যিনি নিজের দল থেকে দুর্নীতিবিরাধী অভিযান শুরু করেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) যে সাহস দেখিয়েছেন এই সাহস অতীতে কেউ দেখাতে পারেনি। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তারা নিজেরা দুর্নীতি করেছে, দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনাই একমাত্র নেত্রী যিনি নিজঘর থেকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল হত্যার বিচার করে দেশকে বিচারহীনতার কলঙ্ক থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কোন হত্যার বিচার করনেনি, বরং খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। এই কারণেই আজ তাদের এই অবস্থা। নিজেদের ভুলের কারণে বিএনপি আজ ধ্বংস হতে বসেছে।
অভ্যর্থনা কমিটির বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে কমিটির সদস্য সচিব শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ৫০ এর অধিক বিদেশী মেহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে এবার ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে কোন বিদেশী মেহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তিনি বলেন, আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালন করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে বিদেশীরা আসবেন, এজন্যই এবারের সম্মেলনে কোন বিদেশী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সংসদ সদস্য ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।