বিক্ষোভের মুখে সিলেটে রবীন্দ্র স্মরনোৎসব উদযাপন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিবের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন আমিনুল ইসলাম লিটন। লিটনের পদত্যাগের পর এবার সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পদত্যাগ দাবিতে অনড় রয়েছেন সিলেটের সংক্ষুব্ধ সংস্কৃতিক কর্মীরা। আন্দোলনের পরিসর বৃদ্ধি করে এবার বৃহৎ কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামছেন তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথে পৃথক বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে সিলেটের সাবেক ছাত্রনেতাদের সম্পৃক্ত করে আন্দোলন বেগবান এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঘেরাও কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত অন্যতম উদ্যোক্তা কবি ও সংস্কৃতিকর্মী দেবব্রত রায় দিপন কর্মসূচির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যারা মননে মগজে বাঙালি সংস্কৃতি লালন করেনা, তাদের বাদ দিয়ে সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি যুক্ত করে উদযাপন পরিষদ গঠন করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলনের দাবানল সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে তা, নেভানোর দায় এই পরিষদকেই বহন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার প্রশ্নে কোন আপোষ চলবে না। কমিটিতে বিএনপি জামাতের চিহ্নিত মানুষদের রেখে শুধু রবীন্দ্রনাথকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে না, একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর নাম জড়িত করে আওয়ামী লীগকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে একই দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সিলেটের সংক্ষুব্ধ সংস্কৃতি সমাজ । মঙ্গলবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে সংস্কৃতিকর্মীদের এই দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট, শহিদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদ,জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট,বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা, গীতিকবি ফাউন্ডেশন, ছড়াপরিষদ, ছড়ামঞ্চ, জয়বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদসহ অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী ও সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হ্যারল্ড রশীদ চৌধুরী এর সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাদশা গাজীর পরিচালনায় মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলা ও বাঙালীর সাংস্কৃতিক চেতনার নাম রবীন্দ্রনাথ । সেই চেতনা যারা লালন করেননা, তারা কখনোই নিজেদের বাঙালি বলার যোগ্যতা রাখেননা । সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে আজ কাউয়াদের আনাগোনা।
সিলেটে কবিগুরুর পদার্পনের শতবর্ষকে সামনে রেখে গঠিত উদযাপন পরিষদেও যুক্ত করা হয়েছে বিতর্কিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী শক্তির অনুসারিদের। জামাতের আর্থিক যোগানদাতাও আছেন স্মরণোৎসবের আয়োজনে । যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
বক্তারা আরো বলেন, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী একটি হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী । তিনি সিসিকের মেয়র হলেও জাতীয় শোক দিবস পালনে অনুপস্থিত থাকেন। জাতীর পিতার মিলাদ মাহফিলেও আরিফুল হককে দেখা যায়না। অতএব জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভামঞ্চে আরিফুল হক চৌধুরী কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সভায় একাত্বতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেওয়ান জাফর সাদেক কয়েছ গাজী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক গীতিকার আজহার উদ্দিন জাহাঙ্গির, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তপন মিত্র, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি ছড়াশিল্পী জয়নাল আবেদীন, সহসভাপতি বাউল বিরহী কালা মিয়া, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট সিলেট জেলার সভাপতি ডা. নাজরা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাট্যকর্মী এনামুল মুনীর, প্রবীন নাট্যকর্মী আশুতোষ ভৌমিক বিমল, বেলাল আহমদ, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আব্দুল লতিফ নুতন, কবি সংগঠক ও সাংবাদিক দেবব্রত রায় দিপন,সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নাট্য কর্মী তাজ আহমদ লিটন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদক কন্ঠশিল্পী ডি কে জয়ন্ত, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য কন্ঠশিল্পী এম এইচ নিজাম, জাতীয় শিশু কিশোর ও যুব কল্যান সংগঠন চাঁদের হাটের সিলেট জেলার আহবায়ক মোহাম্মদ আঙ্গুর মিয়া, সাংবাদিক নাজমুল কবির পাবেল, সাংবাদিক সোয়েব বাসিত, সিলেট জেলা যুব লীগ নেতা সাজলু লস্কর,সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুর রশিদ, সাবেক ছাত্রনেতা সজল চৌধুরী,ইলিয়াছি চৌধুরী দিনার, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, কামরুল ইসলাম, শিল্পী সজল দেবনাথ সংগঠক তোফায়ের আহমদ, সাহাব উদ্দিন আহমদ সাবু প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি