কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) ঘোষণা দিয়ে এর নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নীতিমালা করে সেটা যাচাই-বাছাই করেই তালিকাটা প্রণয়ন করা হয়েছে। আপনারা নীতিমালা অনুযায়ী সব নির্দেশনা পূরণ করতে পেরেছেন বলেই এমপিওভুক্ত হয়েছেন। কাজেই এটা ধরে রাখতে হবে। কেউ যদি এটা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, সঙ্গে সঙ্গে তার এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে। কারণ এমপিওভুক্তি হয়ে গেছে, বেতন তো পাবই, ক্লাস করানোর দরকার কি, পড়ানোর দরকার কি- এ চিন্তা করলে কিন্তু চলবে না।
বুধবার তার সরকারী বাসভবন গণভবনে নতুন করে এমপিওর তালিকাভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ঘোষণা উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলো, চাহিদা অনুযায়ী তাদের নির্দেশনাগুলো মানতেই হবে। তা না হলে এই সুবিধা বাতিল করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বুধবার নতুন ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলো। গত ১ জুলাই থেকে অর্থাৎ অর্থবছরের শুরু থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। এমপিও তালিকাভুক্ত বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতনের একটি অংশ সরকার থেকে পান। এ জন্য প্রথমে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করা হয় এবং শর্ত পূরণের ভিত্তিতে সেই প্রতিষ্ঠানের যোগ্য শিক্ষকরা এমপিও তালিকায় আসেন। ঘোষিত ২ হাজার ৭শ’ ৩০টি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩৯টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯৯৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯৩টি কলেজ, ৫৬টি ডিগ্রী কলেজ, ৫৫৭টি মাদ্রাসা এবং ৫২২টি কারিগরি শিক্ষা ইনস্টিটিউশন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে নতুন করে ২ হাজার ৭শ ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করলাম। একটি নীতিমালা করে নিয়ে যাচাই-বাছাই করে তারপরে এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। তবে আমাদের কথা হচ্ছে আমাদের নীতিমালার যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে, যারা সেই নির্দেশনাগুলো পূরণ করতে পারবেন এবং সেই স্কুলগুলো যেগুলোর আসলে প্রয়োজন আছে সেটা বিবেচনা করেই আমরা এমপিওভুক্ত করব। কাজেই যারাই এমপিওভুক্তি চান তাদের এই নির্দেশনা মানতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে আমরা করে দিচ্ছি ঠিকই কিন্তু ওই নীতিমালাগুলো পূর্ণ করতে হবে এবং সেটা অব্যাহত রাখতে হবে। যদি এমপিওভুক্তির এই সুযোগটাকে অব্যাহত রাখতে চান। এমপিওভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রতি ধন্যবাদ এবং এমপিওভুক্ত নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এটা দীর্ঘদিনের একটা চাহিদা ছিল। আমরা এই নিয়ে অনেক দিন থেকেই কাজ করছি। সবাই মিলে কাজ করে একটা তালিকা করে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিতে পারলাম। তাদের কাছে আমার একটাই দাবি থাকবে যে, এখন এমপিওভুক্ত হয়ে গেছে, কাজেই শিক্ষার মান এবং শিক্ষার পরিবেশটা যেন আরও সুন্দর হয়।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এমপিওভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আগে যারা এমপিওভুক্ত ছিল তাদের বেতনের টাকাটা সরাসরি ওই প্রতিষ্ঠানে চলে যেত। যার ফলে অনেক সময় তাদের কাছ থেকে একটা নালিশ আসত, যে তারা ঠিকমতো বেতন পায় না। তখন আমরা ঠিক করি যে, যার যার বেতন তার তার কাছে সরাসরি চলে যাবে এবং প্রতিমাসে একটা পেমেন্ট অর্ডারের মাধ্যমে যার নামে তার টাকার চেক পৌঁছে যাবে।
এ বিষয়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা করে একটা সুবিধা হলো যে, দেখা গেল প্রায় ৬০ হাজার ভুয়া শিক্ষক ছিল, যাদের নামে টাকা যেত। যখন আমরা প্রতিজনের নামে মাসিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে শুরু করলাম, তখন এই ৬০ হাজার শিক্ষকের আর কোন খোঁজ পাওয়া গেল না।
যত্রতত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে শিক্ষার সঠিক মানটা আর বজায় থাকে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তীব্র একটা দাবি ছিল এমপিওভুক্তির। আর এজন্য শিক্ষকরা আন্দোলনও করেছেন। তখন আমরা বলেছি আমরা সবই করব। কিন্তু একটা নীতিমালার ভিত্তিতে করব। তিনি বলেন, শিক্ষাকে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেই বলেই একে একটি নীতিমালার ভিত্তিতে করতে চেয়েছে সরকার। যাতে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। তবে, এই নীতিমালা ঠিক করে একে যাচাই-বাছাই করে তালিকাটা করতে একটু সময় লেগে যায়।
তিনি বলেন, তার সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে, দেশের বাজেট বৃদ্ধি করে শিক্ষা খাতে সর্বাধিক ব্যয় বরাদ্দ করেছে, যাতে করে শিক্ষাকে আধুনিক এবং বিজ্ঞানসম্মত করে যুগের চাহিদা মোতাবেক প্রযুক্তি নির্ভর করে তোলা যায়। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম এবং কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিয়ে এবং ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে ঘরে বসে উপার্জনের জন্য তার সরকারের ‘লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং কর্মসূচী’ চালু, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা এবং শিক্ষা সম্প্রসারণ ও যুগোপযোগীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতার বক্তৃতার উদ্বৃত করে শিক্ষকদের মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলায় সুশিক্ষায় শিক্ষিত সোনার ছেলে-মেয়ে তৈরির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সেই সোনার ছেলে-মেয়ে যেন তৈরি হয়, সেই দায়িত্বটা শিক্ষকদের ওপরই বর্তায়। কারণ শিক্ষকরাই তো মানুষ গড়ার কারিগর। কাজেই তারা সেটা করবেন। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
শিক্ষার্থীরা স্কুল পর্যায় থেকেই যাতে কারিগরি শিক্ষা বা ভোকেশনাল ট্রেনিং নিতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছোট-ছোট বাচ্চাদের ভেতরে অনেক মেধা লুকিয়ে আছে। তারা অনেক কিছু তৈরি করতে পারে। তাদের সেই মেধা বিকাশের একটা সুযোগ আমাদের করে দেয়া দরকার। শুধু উচ্চশিক্ষা নিয়ে, ডিগ্রী নিয়ে তো লাভ নাই। তাকে তো কিছু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কিছু করে খেতে হবে। সেটার ব্যবস্থা যাতে করতে পারি, যা দেশে-বিদেশে যেখানেই হোক। সেটাকেই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। সেভাবেই আমরা করে যাচ্ছি।
কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির ব্যবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন তাদেরও প্রয়োজন ছিল। তাদের অবহেলা করে কেবল দোষ দিয়ে চলবে না। শিক্ষা জীবন শেষে তারা কোথায় যাবে, কী কাজ করবে, কীভাবে চলবে? তারা তো এ দেশেরই সন্তান। হাওড়-বাঁওড়, পাহাড় ও দুর্গম এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য আবাসিক স্কুল করে দেয়ার পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
২৩ উপজেলায় কোন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি : সর্বশেষ ২০১০ সালে এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ নয় বছর পর এবার এমপিওভুক্ত হলো প্রায় দ্বিগুণ দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘোষণার পর থেকেই তালিকা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যোগ্য প্রতিষ্ঠান না থাকায় ২৩টি উপজেলায় এবার কোন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। এমপিওভুক্তির তালিকায় আধিক্য পেয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোর ও পঞ্চগড় জেলা। হবিগঞ্জের নয়টি উপজেলায় কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে তিনটি।
এমপিও কার্যক্রমের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় শিক্ষা তথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ। তিনি বলছিলেন, আসলে ২৩টি উপজেলা বা থানার একটি প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণ হচ্ছে অনেকগুলো। যেমন ঢাকার কোন কোন থানা থেকে কোন আবেদনই ছিলনা। আবার বাইরের দু’একটি উপজেলায় তাতে গোনা কয়েকটি আবেদন হয়েছে। যেগুলোর নীতিমালার কোন যোগ্যতার মাপকাঠিতে পড়েনা।
সরকারের এ কর্মকর্তার দাবি, এবার সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নীতিমালারা বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্ত হয়নি। কোন অর্থনৈতিক লেনদেনও হয়নি। তবে কেউ কেউ হয়তো আগেই জেনেছেন তাদের প্রতিষ্ঠান তালিকায় আছে। পরে এলাকায় গিয়ে হয়তো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তদের কাছ থেকে এমপিও করিয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে থাকতে পারেন।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এক অনুষ্ঠানে নতুন এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নীতিমালা করে সেটা যাচাই-বাছাই করে তালিকাটা প্রণয়ণ করা হয়েছে। দুই হাজার ৭৩০টি প্রতিষ্ঠানকে আমরা এমপিভুক্ত করেছি। যারা এমপিওভুক্তি চান, তাদের সে নির্দেশনাগুলো মানতে হবে। যাদের এমপিওভুক্ত করলাম, তাদের কাছেও আহ্বান থাকবে- নীতিমালা অনুযায়ী সব নির্দেশনা পূরণ করতে পেরেছেন বলেই এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এটা ধরে রাখতে হবে। কেউ তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে এমপিও বাতিল হবে। এমপিওভুক্ত হয়ে গেছে, বেতন তো পাবই, তাহলে আর ক্লাস নেয়ার দরকার কী, পড়ানোর দরকার কি- এ চিন্তা করলে চলবে না।
এদিকে তালিকা প্রকাশের পরই এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ফোন করে অভিযোগের কথা জানিয়েছের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগও তুলেছেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সংশ্লিষ্ট থাকা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার আলহাজ মিজানুর রহমান চৌধুরী কৃষি কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে, যার প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান জামায়াতের এমপি ছিলেন। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লতিফা চৌধুরী মহিলা কলেজ। লতিফা চৌধুরীর স্বামী বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন।
নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ রয়েছে এক হাজার ৬৫১টি। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী) ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী) ১০৮টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণী স্তরের প্রতিষ্ঠান ৮৮৭টি, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৮টি, কলেজ (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী) ৯৩টি এবং ডিগ্রী কলেজ ৫৬টি।
এ ছাড়া কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অধীন মাদ্রাসা রয়েছে ৫৫৭টি। এর মধ্যে দাখিল স্তরের মাদ্রাসা ৩৫৭টি, আলিম স্তরের ১২৮টি, ফাজিল স্তরের ৪২টি এবং কামিল স্তরের ২৯টি মাদ্রাসা রয়েছে। আর নতুন এমপিওভুক্ত হয়েছে ৫২২টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে কৃষিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ৬২টি, স্বতন্ত্র ও সংযুক্ত ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান ১৭৫টি, বিএম স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান ১৭৫টি এবং বিএম সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান ১০৮টি। এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসে বেতনের মূল অংশ ও কিছু ভাতা পেয়ে থাকেন।
এর আগে ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এরপর দীর্ঘদিন এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এমপিওর তালিকাভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতনের একটি অংশ সরকার থেকে পান। এ জন্য প্রথমে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করা হয় এবং শর্ত পূরণের ভিত্তিতে সেই প্রতিষ্ঠানের যোগ্য শিক্ষকরা এমপিও তালিকায় আসেন।
এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কয়েকটি শর্ত দিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে বলে বাজেটের আগে জানিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু বাজেটে এ বিষয়ে কোন ঘোষণা না থাকায় আমরণ অনশনে বসেন নন-এমপিও বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত বছর ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির কার্যক্রম দ্রুত শুরুর কথা জাতীয় সংসদে জানান।
গত জুন মাসে ২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষণা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, দীর্ঘদিন পর এমপিওভুক্তির কার্যক্রম আবার শুরু হচ্ছে এবং নতুন বাজেটে সেজন্য বরাদ্দও রাখা হচ্ছে।