পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করুন

9

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর বাংলাদেশে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। দাম আরো বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় বেশি করে পেঁয়াজ কিনে রাখছেন অনেকে। যদিও পেঁয়াজের মজুদ ‘সন্তোষজনক’ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে। কেউ বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্যসচিব। পেঁয়াজের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার ও মজুদের অপরাধে নোয়াখালীতে দুই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু তাতেও অস্থিরতা কমেনি।
ভারত সরকার রপ্তানি নিরুৎসাহ করতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮৫০ ডলারে বেঁধে দেয়। ওই খবরে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে যায় ২০ থেকে ২৫ টাকা। যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। কোনো কোনো দোকানে পেঁয়াজের বস্তা প্রায় ছাদ ছুঁয়েছে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পরও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১৪টি ট্রাকে পেঁয়াজ দেশে এনেছেন ব্যবসায়ীরা, যাতে ছিল ২৬৮ টন। এর আগে ১৯টি ট্রাকে ৪৩৭ টন ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে ঢোকে শুধু হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। এসব পেঁয়াজ ট্রাকে করে সরাসরি দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে দুই চালানে এসেছে মিয়ানমারের ১৭৪ টন পেঁয়াজ। একই সময়ে খালাস হয়েছে মিসর থেকে আসা ১৪৫ টন। পেঁয়াজের বাজারের ‘অস্থিরতা’ ঠেকাতে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ৩৫টিসহ সারা দেশে ৭৫টি ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত সোমবার এক দিনেই টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢুকেছে রেকর্ড পরিমাণ ৫৩৬ টন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হিলি বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বন্দরের বিভিন্ন বেসরকারি গুদামে পেঁয়াজ মজুদ করে রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়েছেন। গুদামে পেঁয়াজ মজুদ থাকার পরও বিক্রি করছেন না আমদানিকারকরা।
একধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। বাজার অস্থির করে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি করা অসাধু ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য নয়তো? আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কাজেই শুধু হুঁশিয়ারি না দিয়ে বাজারে অভিযান চালানো দরকার। একই সঙ্গে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সারা দেশে খোলাবাজারে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি বাড়াতে হবে।