দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চলছে এবং তা সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। কিন্তু একই সময়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি হঠাৎ করেই উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আগামী দিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। খুনের ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধপ্রবণতাও বাড়ছে। নৃশংস অমানবিকতা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। খুনের পাশাপাশি ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের ঘটনাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা যে কঠিন হয়ে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
গণমাধ্যমে আসা খবরগুলো দেশের অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সাক্ষ্য বহন করছে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, কক্সবাজারের উখিয়ার রতœাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রতœাপালং গ্রামে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একই পরিবারের চার সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার গাজীপুর মহানগরীর পুবাইলে একটি ঘরের ভেতর থেকে স্বামী-স্ত্রীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামে। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় বাসার মেঝে থেকে এক গৃহবধূর এবং অন্য একটি ঘরে চেয়ারে বসা অবস্থায় তাঁর স্বামীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামে তুচ্ছ ঘটনার জেরে খুলনায় মাছ কম্পানির কর্মচারী সারজিল রহমান সংগ্রামকে কিশোর গ্যাং হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের এক পক্ষ আরেক পক্ষের সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ময়মনসিংহের তারাকান্দায় এক তরুণীকে দুইবার দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নাটোরের বাগাতিপাড়ায়, রাজবাড়ী ও জামালপুরের বকশীগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তিন স্কুলছাত্রী। রাজশাহীর পবা উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচ রাখাল এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এক গৃহকর্মীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুলনায় গয়না তৈরির টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ছাড়া জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পটুয়াখালীতে সংঘর্ষে এক কৃষক নিহত হয়েছে।
এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন, তা মনে করার কোনো কারণ নেই। সমাজের যে অবক্ষয় ঘটে গেছে, এসব ঘটনা তারই প্রমাণ। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নতুন করে তৎপর হতে হবে।