কাজিরবাজার ডেস্ক :
বন্যা, বা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ব্যবহারের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ নৌযান রেসকিউ বোট। এসব নৌযানের সাহায্যে বন্যাকবলিত নারী, শিশু, প্রতিবন্ধীদের পাশাপাশি গবাদিপশু উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। ইঞ্জিনচালিত এসব নৌযানে কমপক্ষে ১০০ জন মানুষ ও ১০ টন পণ্য পরিবহন করা যাবে। বন্যা-জলোচ্ছ্বাস শেষে এসন নৌযানকে বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের বন্যাপ্রবণ ৬০টি উপজেলায় বিশেষ এই নৌযান সরবরাহ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় সরবরাহ করবে সরকার। এছাড়া, সব জেলায়ও থাকবে একটি করে বিশেষ নৌযান। ইতোমধ্যে দুর্যোগের সময় ব্যবহারের জন্য বিশেষ এই নৌযানের মডেল অনুমোদন করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় বিশেষ এই নৌযানের নকশা অনুমোদন করেছেন টাস্কফোর্সের প্রধান উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। টাস্কফোর্সের সভাশেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নৌবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং জেটিতে তৈরি হবে এসব নৌযান। প্রতিটি নৌযান নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ লাখ টাকা। প্রতিবছর ২০টি করে তিন বছরে মোট ৬০টি নৌযান নির্মাণ করে তা সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে। এজন্য কোনও দরপত্র আহবান করার প্রয়োজন হবে না। সরকার টু সরকার ফর্মুলায় এসব নৌযান নির্মাণের ব্যয় বহন করবে সরকার। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এসব নৌযান সরকারের কাছে হস্তান্তরের পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত তদারকির দায়িত্ব পালন করবে নৌবাহিনী। এসব নৌযানের জ্বালানির খরচ মেটানো হবে জেলা প্রশাসকের বিশেষ তহবিল থেকে।
বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসে মানুষ, গৃহপালিত পশুপাখি নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বিশেষ নৌযান দেওয়া হবে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রাথমিকভাবে ১০০ জন ধারণক্ষমতার ৬০টি নৌযান নির্মাণ করা হবে। জি-টু-জি পদ্ধতিতে নৌযানগুলো নির্মাণ করবে নৌবাহিনী। আর প্রতিটি নৌযান নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ লাখ টাকা।’ যখন বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকবে না, তখন বোটগুলো স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় নৌযান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নৌযানে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। যা দিয়ে রাতে বাতি জ্বলবে, বৈদ্যুতিক পাখা চলবে। মোবাইলেও চার্জ দেওয়া যাবে। নৌযানের ডেকের দুই পাশে বসার বেঞ্চ থাকবে, যেখানে মানুষ নিরাপদে বসতে পারবে। মেঝেতে মালামাল, পশুপাখি রাখা যাবে। নৌযানে স্বচ্ছ টিনের চাল থাকলেও প্রয়োজনে তা খুলে রাখা যাবে।’ নৌযানটি সম্পূর্ণ স্টিল দিয়ে তৈরি হবে বলেও তিনি জানান।