লাইসেন্স বাতিল চেয়ে গ্রামীণফোন ও রবির বিরুদ্ধে কারণ দর্শাও নোটিশ

50

কাজিরবাজার ডেস্ক :
গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স বাতিল করার জন্য বিটিআরসি নোটিস দিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ (বিটিআরসি) আইন ২০০১’র ৪৬(২) ধারা মোতাবেক মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির ২জি ও ৩জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর জন্য ওই নোটিসে বলা হয়েছে। দুই দফা চাপ দিয়েও নিরীক্ষা আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা আদায় করতে না পেরে দেশের দুই মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপে গেল বিটিআরসি। বৃহস্পতিবার দুই অপারেটরকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জাব্বার বলেন, পাওনা টাকা তাদের দিতেই হবে। এখানে ব্যবসা করবে অথচ পাওনা টাকা দিবে না তা হতে পারে না। পাওনা টাকার জন্য আমাকে নানা জায়গায় কথা শুনতে হয়। সংসদেও এ নিয়ে আমাকে কথা শুনতে হয়েছে। তারা ব্যবসা করবে আর সরকারের পাওনা দেবে না এটা হতে পারে না। অপারেটররা টাকা না দিয়ে মামলা করে আছে। আবার তারা আলোচনায় বসতে চায়। মামলা রেখে কোন আলোচনা হতে পারে না। আগে টাকার কিস্তি শোধ করতে হবে তারপর আলোচনা হতে পারে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৪৬(২) ধারা মোতাবেক মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে নোটিসে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে বা পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে সোয়া ১২ লাখ গ্রাহকের এই দুই অপারেটরে প্রশাসক নিয়োগের মতো পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান।
বিটিআরসির সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গ্রামীণফোন ও রবি ওই নোটিসকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করেছে। দুই অপারেটর এটাকে অন্যায্য পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে। বিটিআরসির দাবি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসা করার প্রস্তাব দিয়েছিল রবি ও গ্রামীণফোন। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের আইনে এ ধরনের ক্ষেত্রে সালিশের কোন সুযোগ নেই।
বিটিআরসির দাবি, নিরীক্ষা (অডিট) অনুযায়ী গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিটিআরসি পাওনা ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি এক লাখ টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পাওনা ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) চিঠি দেয়া হয়েছে। নিয়োগকৃত অডিট ফার্মের অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে এই টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু চার মাসেও তারা টাকা পরিশোধ করেনি। মূল পাওনা ছিল প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। সুদ বেড়ে এত বিশাল অঙ্কের টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিটিআরসির পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য গ্রামীণফোনকে ১০ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়েছিল। টাকা আদায়ে বিটিআরসি তাদের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছে। তাগাদা দেয়ার পরও ওই টাকা পরিশোধ না করার যুক্তি দেখিয়ে গত ৪ জুলাই গ্রামীণফোনের ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি ৩০ শতাংশ এবং রবির ১৫ শতাংশ সীমিত করতে আইআইজিগুলোকে নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। গ্রাহকের সমস্যার কথা চিন্তা করে ১৩ দিনের মাথায় ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় বিটিআরসি। এরপর ২২ জুলাই গ্রামীণফোন ও রবিকে বিভিন্ন প্রকার সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় বিটিআরসি।