রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোন বন্ধের নির্দেশ

16

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মোবাইল সেবা বন্ধের জন্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন)। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নির্দেশের পর বিটিআরসি এ পদক্ষেপ নিয়েছে। বিটিআরসির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার বিটিআরসির চিঠি মোবাইল অপারেটররা পেয়েছে।
বিটিআরসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে রাখা নিশ্চিত করতে হবে। বিটিআরসি রবিবারই সব মোবাইল অপারেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির ওই চিঠি দেয়া হয়েছে পেয়ে কাজ শুরুর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিটিআরসির উপপরিচালক মোঃ নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিম বিক্রি ব্যবহার বন্ধ তথা মোবাইল সুবিধাদি না দেয়া সংক্রান্ত সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গুরুত্ব বিবেচনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনসুরক্ষার স্বার্থে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যাতে মোবাইল সুবিধা না পায়-এ বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আগে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকারী কমিটি, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে সেখানে ব্যাপক হারে সিম ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।
এ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশ এমটব জানিয়েছে, মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির চিঠি পেয়েছে। এখন বিটিআরসির নির্দেশ অনুযায়ী অপারেটররা কাজ শুরু করবে। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের কাজ ঠিক কবে থেকে শুরু হবে তা এমটব জানাতে পারেনি।
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার বন্ধে সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ভবিষ্যতে রোহিঙ্গারা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি অবৈধ টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রোহিঙ্গারা সংগঠিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মোবাইল গ্রাহক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। গত ৩১ আগষ্টগণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে মহিউদ্দিন বলেন, ২ বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত দাঙ্গা ও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা শুরু হলে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। মানবিক দিক বিবেচনায় সরকার তাদের টেকনাফে সাময়িক আশ্রয় দেয়। টেকনাফের এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কাছে সিম বিক্রি শুরু করে। একইভাবে তারা রোহিঙ্গাদের কাছে স্মার্টফোন বিক্রির ব্যবসা ও করে যাচ্ছে। টেকনাফে এটি একটি বড় ব্যবসা। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার ২ বছর পূর্তি উপলক্ষে লাখ লাখ রোহিঙ্গা হঠাৎ করে জমায়েত হয়ে জনসভা করে। এটা সম্ভব হয়েছে মোবাইলের সেবার কারণে। রোহিঙ্গারা ৩জি-৪জি পর্যন্ত সেবা ব্যবহার করছে। সীমান্তের ওপারে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত থাকায় বিষয়টি উদ্বেগজনক।
অন্যদিকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, উন্নত মোবাইল ও সিম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে প্রচার করছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেন মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা না পায়, সেজন্য অপারেটরগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বিটিআরসি। এতে আশ্রয় ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকাজে সহজ হবে উল্লেখ করে সচেতন মহল জানান, আরাকান বিদ্রোহী রোহিঙ্গা জঙ্গীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে না পারলে ক্যাম্পে খুনখারাবিসহ বেআইনী কর্মকা- অনেকাংশে কমে যাবে।