জগন্নাথপুরে চাঞ্চল্যকর রিক্সা চালক হত্যা মামলার অপর আসামী পলাতক, গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান

18

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে চাঞ্চল্যকর রিকশা চালক জামির মিয়া হত্যা মামলার অপর আসামী আজিদ মিয়া পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
জানা যায়, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হাবিবনগর গ্রামের এখলাছ মিয়ার ছেলে সাকিল ওরফে সেকেল মিয়ার একটি রিকশা গ্যারেজ রয়েছে হাবিবনগর গ্রামের ছিলিমপুর ষ্ট্রেট মার্কেটে। এ গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরি থানার আসাদপুর গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে জামির মিয়া। হঠাৎ করে বেশ কিছু দিন আগে রিক্সা চালক জামির মিয়ার পরিচিত এক ব্যক্তি এ গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নেয়ার সময় তার জিম্মাদার ছিলেন জামির মিয়া। কয়েক দিন পর ওই ব্যক্তি রিক্সা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকায় শালিস বৈঠকে ১৮ হাজার টাকা ভর্তুকি দেয়ার দায় পড়ে রিক্সা চালক জামির মিয়ার উপর। প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে প্রদানের রায় দেয়া হয় এবং এভাবেই টাকা পরিশোধ করছিলেন জামির মিয়া। এতে বাধ সাধে ঈদ। ঈদের সময় রিকশা চালক জামির মিয়া তার দেশের বাড়ি যেতে চাইলে বাধা দেন গ্যারেজ মালিক সেকেল মিয়া। তার ধারনা সে চলে গেলে আর আসবে না। যে কারণে গত ১৩ আগষ্ট থেকে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে রিকশা চালক জামির মিয়াকে বেঁধে রেখে মারপিট করেন সেকেল মিয়া। ঘটনার ৩ দিন পর ১৬ আগষ্ট জামির মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মোটরসাইকেল দিয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান সেকেল মিয়া। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলেও তাকে ওসমানীতে নেয়া হয়নি। ঘটনার প্রায় ২ ঘন্টা পর স্থানীয় সিলেটী বাস ষ্ট্যান্ড নামক স্থানে রিক্সা চালক জামির মিয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিকশা চালক জামির মিয়ার স্ত্রী জামেনা বেগম বাদী হয়ে নির্যাতনকারী সেকেল মিয়া ও আজিদ মিয়া সহ ২ জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৭, তারিখ-১৭/০৮/২০১৯ ইং। এ ঘটনায় পুলিশ সেকেল মিয়াকে গ্রেফতার করলেও অপর আসামী আজিদ মিয়া এখনো পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় ২০ আগষ্ট মঙ্গলবার সরজমিনে হাবিবনগর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাওনা টাকার জন্য রিকশা চালক জামির মিয়াকে শিকল দিয়ে গ্যারেজ মালিক সেকেল মিয়া তার ঘরে বেধে রেখেছিল। ঘটনার ৩ দিন পর জামির মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতাল মিয়া যায় সেকেল মিয়া। পরে স্থানীয় সিলেটী বাস ষ্ট্যান্ড এলাকায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর সেকেল মিয়া পালাতে চাইলে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সুহেল আহমদের সহযোগিতায় সেকেল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেদিনের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ইমার্জেন্সী বিভাগে জামির মিয়াকে নিয়ে আসা হলে দেখা যায়, তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ সময় জামির মিয়া নিজে জানায়, তার বুকে প্রচন্ড ব্যথা। হার্ট এ্যাটাকের লক্ষণ। যে কারণে তাকে আমি সিলেট ওসমানীতে রেফার করেছিলাম। পরে কি হয়েছে আমি জানি না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাকে মারপিটের কোন কথা সে বলেনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই লুৎফুর রহমান বলেন, মামলার প্রধান আসামী সেকেল মিয়াকে গ্রেফতারে পৌর কাউন্সিলর সুহেল আহমদ পুলিশকে সহযোগিতা করেছে। তবে অপর আসামী আজিদ মিয়া পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।