১২ দিনে সারাদেশে নৌ দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঈদুল আযহার আগে ও পরে ১২ দিনে সারাদেশে নৌ-পথে ২১টি দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৬৪ জন। সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের- এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল এবং টেলিভিশনের সংবাদ-তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করে তারা। গতকাল সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া সংস্থাটির প্রতিবেদনে ঈদযাত্রা উপলক্ষে ৬ আগষ্ট থেকে ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত ১২ দিন সারাদেশে সড়ক ও রেলপথে দুর্ঘটনার চিত্রও উঠে আসে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী এই ১২ দিনে সারাদেশে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭৬টি। এতে নিহত হয়েছেন ২২৩ জন। আহতের সংখ্যা ৬৭০। এর মধ্যে ১৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬২৭ জন। সড়কে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছিল তার মধ্যে মহাসড়কের চেয়ে আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনার মাত্রা বেশি ছিল। মহাসড়কে ৬৫ এবং আঞ্চলিক সড়কে ৮১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। রোড সেফটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সড়কপথে নিহতদের মধ্যে পুরুষ ১৫৯ জন ও নারী ৩৮ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে। ৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬৯ জন। নৌ পথের ২১টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত, ৩২ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ৬৪ জন।
এছাড়া রেলপথে নয়টি দুর্ঘটনায় সাত জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন বলে রোড সেফটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। দুর্ঘটনা নিয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ ও সুপারিশও দিয়েছে। তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী মহাসড়কের চেয়ে আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেশি ছিল। মহাসড়কে ৬৫ এবং আঞ্চলিক সড়কে ৮১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ঈদপূর্ব যাত্রায় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ রুটে ভয়াবহ যানজটে ঘরমুখী মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। পথে পথে পশুবাহী যানবাহনে রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হয়েছে। ঢাকা শহরের ফিটনেসবিহীন লোকাল বাসগুলো বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবহনের কারণে যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সকল রুটে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়েছে। স্বল্পগতির যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করেছে। প্রথম দিন থেকেই ট্রেনের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে ট্রেনযাত্রীদের অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। নৌ-পথে অব্যবস্থাপনা বরাবরের মতোই বিদ্যমান ছিল। প্রতিশ্রুতি থাকলেও সড়ক-নৌ ও রেলপথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা দৃশ্যমান ছিল না। বাস্তবতা হলো, ঈদ উপলক্ষে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াতের জন্য মানসম্পন্ন যথেষ্ট গণপরিবহন দেশে নেই।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও অদক্ষ চালক; অতিরিক্ত গতি ও ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেক করার প্রবণতা; বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো; সড়ক-মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল; যাত্রী ও পথচারীদের অসচেতনতাকে দায়ী করা হয়।
গণপরিবহন কেন্দ্রীক অসুস্থ সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি দুর্নীতি বন্ধ করে টেকসই পরিবহন কৌশল গ্রহণ করতে সুপারিশ করেছে রোড সেফটি। এছাড়া পর্যাপ্ত দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া, নিরাপদ যাতায়াতের জন্য আধুনিক সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি রেল ও নৌ-পথকে বিস্তৃত ও মানসম্পন্ন করা, রাজধানী ঢাকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টিও ভাবতে বলা হয়েছে সংস্থাটির প্রতিবেদনে। হবে।