করোনার প্রধান ধরন হবে ‘ডেল্টা’ ॥ ডব্লিউএইচওর সতর্কতা

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে, আগামী মাস কয়েকের মধ্যে ‘ডেল্টা’ হবে করোনার প্রধান ধরন। সংস্থাটি আরও বলেছে, ডেল্টা’ করোনার একটি অতি সংক্রামক ধরন। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১শ’ দেশে করোনার এ ধরনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৯ জন। মৃত্যু ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৬ জন। সুস্থ ১৭ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার ৭৭৫ জন।
২৯ জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডব্লিউএইচও বলেছে, বিশ্বের ৯৬ দেশ করোনার ডেল্টা’ ধরন শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে। তার মধ্যে কিছু দেশে করোনার ডেল্টা ধরন থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধি ও সংক্রমিত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তির হার বাড়তে দেখা যাচ্ছে। ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছে, ডেল্টার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এই ধরনটি করোনার অন্য সব ধরনকে দ্রত ছাপিয়ে যেতে পারে। আর এভাবেই আগামী মাস কয়েকের মধ্যে ডেল্টা করোনার প্রধান ধরন হয়ে উঠতে পারে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় যেসব হাতিয়ার এখন পর্যন্ত বিশ্বে বিদ্যমান রয়েছে, সেগুলোই ডেল্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। তবে যেহেতু বিশ্বে ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ বাড়ছে, তাই সুরক্ষামূলক ব্যবস্থাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত রাখার দরকার পড়তে পারে বলে মনে করছে ডব্লিউএইচও।
বিশ্বের বিভিন্ন অংশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়ছে। করোনার সংক্রমণ নতুন করে বৃদ্ধির জন্য অতি সংক্রামক ডেল্টাসহ অন্যান্য ধরন ভূমিকা রাখছে। এই পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, দুঃস্বপ্ন ফিরে আসছে। ডব্লিউএইচও প্রধান টেডরোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, এখন পর্যন্ত শনাক্ত করোনার ধরনগুলোর মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে সংক্রামক। যারা টিকা নেয়নি এমন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেল্টা ধরন দ্রত ছড়াচ্ছে।
ভারতে মৃত্যু চার লাখ ছাড়াল : ভারতে করোনায় মৃত্যু চার লাখ ছাড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় মারা গেছেন ৮৫৩ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মারা যাওয়া মানুষের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩১২। ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৪৬ হাজার ৬১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ তথ্য নিয়ে দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ ৫৮ হাজার ২৫১। ভারতে টানা ২৫ দিন ধরে ৫ শতাংশের নিচে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোন দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোন দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। ভারতে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩৩ কোটির বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।
সীমান্তে আরো কড়াকড়ি অস্ট্রেলিয়ার : অস্ট্রেলিয়া শুক্রবার দেশে প্রবেশের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত ভ্রমণকারীদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাস ক্লাস্টার আকারে ছড়িয়ে পড়ায় প্রধান নগরীগুলোতে লকডাউন জারি থাকায় এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক লকডাউনে ঘরে থাকায় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে বিদেশী ভ্রমণকারীদের আগমণের কোটা প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস করার ঘোষণা দেন। বর্তমানে “জিরো কোভিড” কৌশলের অধীনে প্রতি সপ্তাহে বিদেশী বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ৬ হাজার লোককে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় এবং আগমনকারীদের বাধ্যতামূলকভাবে দুই সপ্তাহ হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। স্কট মরিসন ইঙ্গিত দিয়েছেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝি এই কোটা কমিয়ে প্রায় ৩ হাজার করা হবে, সরকার একই সাথে প্রাইভেট প্রত্যাবাসন ফ্লাইট বাড়াবে। বারবার লকডাউন, হোটেলে কোয়ারেন্টাইন সুবিধার ঘাটতি এবং টিকা প্রয়োগের ধীর গতির সমালোচনার মধ্যে মরিসন এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ১৮ মাসের বেশী সময় মহামারি চলছে, দেশটিতে ৮ শতাংশেরও কম প্রাপ্তবয়ষ্ককে টিকা প্রদান সম্পন্ন হয়েছে।