পদ প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু ॥ সাড়ে ৪ বছর ধরে কমিটি নেই বিশ্বনাথ ছাত্রদলের

7

জাহাঙ্গির আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে আহবায়ক কমিটি দিয়ে কোনমতে খুঁড়িয়ে খুুঁড়িয়ে চলছে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদল। ফলে, দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে যেমন দলীয় কর্যক্রমে স্থবিরতা তেমনি কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যেও বিরাজ করছে অস্তিরতা। অধিকাংশ নেতাদের দাবি, নেতৃত্ব নিয়ে নিজেদের মধ্যে গ্র“পিং আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এমনটাই হয়েছে। তবে, ‘শিগগিরই কমিটি গঠন হচ্ছে’, জেলা ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এমন ঘোষণায় সভাপতি সাধারণ-সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৪৯ ছাত্রদল নেতা তাদের জীবন বৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিয়েছেন। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী ওই ৪৯ ছাত্রদল নেতা বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) শেষ দিনে সিলেট জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন। ৪৯ জনের মধ্যে সভাপতির পদ প্রত্যাশী ১৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী পদে ২৫ জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ১১ জন রয়েছেন। আর জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের কাংখিত পদ পেতে এরই মধ্যে সিলেট জেলা বিএনপি ও জেলা ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি জোর লবিং করে যাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ২২ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। মতিউর রহমান সুমনকে আহবায়ক ও আলাল আহমদকে প্রথম সদস্য করে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদলের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। আর মাত্র ৩ মাস মেয়াদের ওই কমিটি অনুমোদন দেন জেলা ছাত্রদলের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। কিন্তু ৩ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন তো দূরের কথা, কমিটি ঘোষণার পরদিন ২৩ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয় কমিটির বিপক্ষে প্রতিবাদ। ওইদিন সভাপতি মতিউর রহমান সুমনকে প্রবাসী যুবক আর অছাত্র দাবি করে ছাত্রদল নেতা শাহ আমিরের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে ঝাঁড়– মিছিল করেন ছাত্রদল নেতারা। ওই কমিটি কমিটি প্রত্যাখ্যান নিয়ে প্রতিবাদের পর সভাপিত মতিউর রহমান সুমন ও যুগ্ম-আহবায়ক শাহ আমির গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এর কিছু দিন পর কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদল। বর্তমানে চার বিভাগে বিভক্ত রয়েছে বিশ্বনাথ ছাত্রদল। যে কারণে তিন মাস পর সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে আনুপূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও দলীয় কোন্দল আর গ্র“পিংয়ের কারণে দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছরেও আর পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি। আর ওই চার গ্র“পের মধ্যে আগে থেকেই ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমান খালেদ একটি গ্র“পের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর গঠিত কমিটির আহবায়ক মতিউর রহমান সুমন, আর শাহ্ আমির উদ্দিন পৃথক দু’টি গ্র“পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর বর্তমানে কমিটি গঠন নিয়ে চতুর্থ নম্বর গ্র“পের নেতৃত্বে রয়েছেন ছাত্রদল নেতা শাহজাহান।
এদিকে, গত ৩০ জুলাই সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিলেটের সকল উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদলের পদ প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দকে ছবিসহ তাদের রাজনৈতিক সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত (সিভি) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। আর সিভি জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করে দেন ১৫ আগষ্ট বৃহস্পতিবার। পূর্বঘোষিত ওই সময় অনুযায়ী শেষ দিনে সভাপতির পদ প্রত্যাশী ১৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী পদে ২৫ জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ১১ জন তাদের সিভি জমা দেন।
সভাপতির পদ প্রত্যাশী ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমান খালেদ, শাহ্ আমির উদ্দিন ও মো: শাহজাহান এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা চাই এমন একটি কমিটি, যে কমিটির মাধ্যমে বিএনপির চেয়ারপার্সন, দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে সকল প্রকার আন্দোল বেগবান হবে। এছাড়া যাদের ছাত্রত্ব আছে, যারা দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন এবং বভিষ্যতেও সকল আন্দোলন সংগ্রামে যাদের পাওয়া যাবে তাদেরকে দিয়ে যেন কমিটি গঠন করা হয়। সেজন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদর ও জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দদের প্রতি জোর দাবিও জানান তারা।
এ ব্যাপার সিলেট জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন নাদিম জানান, শিগগিরই সিলেট জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন সকল উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখার কমিটি গঠন করা হবে। এ জন্য আমরা ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। ওই সময়ের মধ্যে বিশ্বনাথ ছাত্রদলের ৪৯জন নেতাকর্মী তারা তাদের সিভি জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের সময় নির্ধারণ করা হবে এবং সকল নেতাকর্মীদেরও জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।