কাজিরবাজার ডেস্ক :
সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে এক বছরের মধ্যে নতুন দরপত্র আহ্বান করতে চায় সরকার। ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে জ¦ালানি বিভাগ। জাতীয় জ¦ালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার এ কথা জানায় জ¦ালানি বিভাগ। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বক্তব্য রখেন। এ সময় জ্বালানি সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৯ আগষ্ট বহুজাতিক কোম্পানি শেল ওয়েলের কাছ থেকে তিতাস, রশিদপুর, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ এবং কৈলাসটিলা গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নেন। ওই সময়ে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডে গ্যাসক্ষেত্রগুলো কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার প্রতি সম্মান জানাতে সরকার এই দিনটিকে জ¦ালানি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। জ¦ালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার পেট্রোবাংলা বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখনও দেশের উচ্চচাপ এলাকায় সেভাবে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করা হয়নি। ফলে ওই এলাকায় আসলে কোন সম্পদের মজুদ রয়েছে কি না তাও জানা যায়নি। সাধারণত পাঁচ হাজার মিটার বা তার নিচেয় উচ্চচাপ এলাকা রয়েছে। চীন সাত হাজার মিটার গভীরে খনন করে গ্যাস পেয়েছে। সরকারও উচ্চচাপ এলাকায় সম্পদ রয়েছে কি না তা জানতে খনন কাজ করবে। এজন্য শেভরনের একটি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলা হয় আমরা ওইসব এলাকায় খনন করার উদ্যোগ নেব। তবে প্রচলিত উৎপাদন বণ্টন চুক্তি পিএসসির বাইরে গিয়ে আমরা এটি করব।
সম্প্রতি মন্ত্রিসভা উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) অনুমোদন করছে। এতে সাগরের গ্যাসের দরপ্রতি হাজার ঘনফুট সাড়ে ছয় ডলার থেকে বৃদ্ধি করে সাত দশমিক ২৫ ডলার করা হয়েছে। এতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আগ্রহী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে একইসঙ্গে তেল গ্যাস অনুসন্ধান জরিপ করার কাজটিও চালিয়ে যাওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। যাকে মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে বলা হচ্ছে। অর্থাৎ জরিপের ফলাফল চাইলেই কিনে অন্য প্রতিষ্ঠানও ব্যবহার করতে পারবে। স্লাম বার্জার নামের একটি বহুজাতিক কোম্পানিকে এই কাজ দিয়েছে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারত থেকে এলএনজি আমাদনি করবে সরকার। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এছাড়া গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির কোন বিকল্প দেখছে না সরকার। পায়রা সমুদ্র বন্দর বা মংলাতে এলএনজির জাহাজ ভেড়ার মতো গভীরতা নেই। সঙ্গত কারণে সেখানে স্থায়ী এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা যাবে না। ভারতের পশ্চিম বাংলাতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত সেখান থেকে বাংলাদেশের কাছে গ্যাস বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের একটি জাতীয় কোম্পানি ছাড়াও দুটি বেসরকারী কোম্পানি বাংলাদেশে গ্যাস বিক্রি করতে উৎসাহী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যমুনার বালিতে খনিজ সম্পদ পাওয়া গেলেও তা অর্থনৈতিকভাবে উপযোগী কি না তা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। পরিবেশের কথা বিবেচনা করেই সরকার কয়লা তোলার সিদ্ধান্ত নেবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।