স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন অনেক ডেঙ্গু রোগী। তাই সিলেটেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সিলেটের সিভিল সার্জন। তাই এ ব্যাপারে সর্তকতা জারী করেছে সিলেট সিভিল সার্জন।
ডেঙ্গু রোগ জাতীয় বিপর্যয়ের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। তাই এই দুর্যোগ মুহূর্তে সিলেটে যাতে ডেঙ্গু রোগ মহামারী রূপ না নিতে পারে সেজন্য জনসাধারণের সচেষ্ট হওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা কর্তৃপক্ষ। সিলেট ডেঙ্গু প্রদ্যোষিত এলাকার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশংকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিলেটের সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। সিভিল সার্জনের আওতাধীন সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু বিষয়ে মনিটরিং সেল গঠন করে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সার্বক্ষণিক সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ টি বেড সংরক্ষণ করে ডেঙ্গু কর্ণার চালু করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার জন্য ২টি বেড সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। দেশের সকল সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালসমূহে বিনামূল্যে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক সকল বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের পরীক্ষা সমূহের ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চিকিৎসকদের প্রস্তুত করা হয়েছে। এবং সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ ও চিকিৎসার জন্য One Stop Service চালু করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিভিল সার্জনের উদ্যোগে সারা শহর ব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মাইকিং করা, সিভিল সার্জন সিলেট ও মেয়র সিলেট সিটি করপোরেশন এর যৌথ উদ্যোগে শহর ব্যাপী ডেঙ্গু বিষয়ক ডিজিটাল ব্যানার ও বিলবোর্ড স্থাপন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও মশা নিধন কর্ম সপ্তাহ উদ্বোধন। বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ঘোষণা প্রচার ও বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুরে আলম শামীম বলেন, প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম সিলেটে ডেঙ্গু রোগী নেই। বা এই রোগটা ছড়াবে না। কিন্তু ঢাকা থেকে অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সিলেটে আসছেন। গত কয়েকদিনে সরকারি বেসরকারি অনেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন, চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে বর্ষা মৌসুম তার উপর সিলেট ঘন বসতিপূর্ণ নগর হওয়ায় এ রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে অতি সহজেই মহামারীর রূপ নিতে পারে। তাই আমরা আশঙ্কা করছি সিলেটও ডেঙ্গু প্রদ্যোষিত হয়ে উঠতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু মহামারী রোধ ও জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু বিষয়ে মনিটরিং সেল গঠন করে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সার্বক্ষণিক সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহে বিনামূল্যে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক সকল বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের পরীক্ষা সমূহের ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সকল হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার জন্য One Stop Service চালু করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে।
সরকারি হাসপাতালসমূহে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ মেশিন না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকল সরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গু শনাক্তকরণ মেশিন পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের পরিচালকের সাথে কথা হয়েছে। যে সকল সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ মেশিন নেই অল্প সময়ের মধ্যেই সে সকল হাসপাতালে মেশিন দেওয়া হবে।