কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট সাতবাঁক ইউপির চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের শেষে মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৪ প্রার্থী তাদের সমর্থকদের নিয়ে বৃষ্টি বাদল উপেক্ষা করে প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণা, গণসংযোগ, সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাষ্টার ফয়জুল ইসলাম (চশমা), আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ইউনিয়নের বিগত নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ইউপি সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মইন উদ্দিন মনই (আনারস) ও সাবেক কুয়েত প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুন নূর কুটই (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ইউনিয়নের নানা শ্রেনীর ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে নির্বাচনে মূলত ত্রি-মুখী লড়াই হবে। তবে দলীয় প্রতীকের ঊর্ধ্বে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও এলাকাভিত্তিক আঞ্চলিকতার টান নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে অনেকে মনে করেন। নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মাষ্টার ফয়জুল ইসলামের নিরব ভোট রয়েছে। তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে প্রতিদিন ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাবেক চেয়ারম্যান এবং একজন আদর্শবান শিক্ষক হিসাবে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। অপর দিকে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান এ ইউনিয়নের সাবেক দুই বারের ইউপি সদস্য ছিলেন। বিগত দু’টি নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভাবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি বিপুল ভোট পান। এবার উপ-নির্বাচনে তাকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনোনীত করায় দলীয় ভোটের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ও দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ইউনিয়নের সর্বত্র ভোট পাবেন। সাধারণ ভোটাররা তার সাথে প্রচারণায় রয়েছেন। তবে ইউনিয়নে অনেক আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন আব্দুল মান্নান কখনো আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। হঠাৎ করে তাকে নৌকা প্রতীক দেওয়ায় দলের অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা মইন উদ্দিন মনই ও আব্দুন নূর কুটইর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়নের সাবেক জনপ্রিয় ইউপি সদস্য ব্যবসায়ী মইন উদ্দিন মনই’র পক্ষে আওয়ামীলীগের একাংশের নেতাকর্মীর পাশাপাশি মুরব্বীয়ান ও যুবকরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনের মূল লড়াইয়ে তিনি রয়েছেন বলে অনেক ভোটাররা জানিয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নেতাকর্মীরা চশমা ও আনারস প্রতীকে ভোট দিতে পারেন এমন ধারনা নির্বাচনীয় এলাকায় গুঞ্জন চলছে। বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত কোন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় এ জোটের সমর্থকদের ভোট যে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেশি পাবেন তিনিই বিজয়ের মালা পরবেন বলে বেশির ভাগ ভোটার মনে করেন। সাতবাঁক ইউনিয়নে বিএনপি-জামায়াতের বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে। অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক কুয়েত প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়া আব্দুল নূর একজন উচ্চ শিক্ষিত প্রার্থী হলেও দীর্ঘদিন প্রবাস থাকায় এলাকায় তার পরিচিতি কম রয়েছে। তারপরও তিনি জোরে সুরে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য ভোট পেলেও বিজয়ের সম্ভাবনা কম রয়েছে তার। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মন্নান, সাবেক চেয়ারম্যান চশমা প্রতীকের প্রার্থী মাষ্টার ফয়জুল ইসলাম ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী মইন উদ্দিন মনই এর মধ্যে ত্রি-মুখী ভোট যুদ্ধ হবে নির্বাচনী এলাকায় এমন সমীকরণ রয়েছে। এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করার স্বার্থে সাতবাঁক ইউনিয়নের স্থায়ী নাগরিক কোন সরকারী কর্মকর্তাদের নির্বাচনের দায়িত্বে না রাখার জন্য ভোটাররা নির্বাচনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি দাবী জানিয়েছেন। নির্বাচনে ১০ হাজার ৩৪ জন ভোটার ভোট প্রদান করবেন। ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতি মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত যে, বিগত কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সাতবাঁক ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মস্তাক আহমদ পলাশ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচন করায় ইউপি চেয়ারম্যান পদটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরই প্রেক্ষিতে উপ-নিবার্চন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।