শেয়ারবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো নয়। শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি, অথচ ক্রেতা কম। কয়েক দিন ধরে সূচক পড়ছিল। গত সপ্তাহে পিপলস লিজিং পথে বসেছে; সোমবার লভ্যাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন। প্রতিক্রিয়ায় ওই দিনই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমে যায় ৮৮ পয়েন্ট। ফলে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার মূল্যসূচকের নিরিখে আড়াই বছর আগে যেখানে ছিল সেখানে ফিরে গেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচক কমেছে ১৫৭ পয়েন্ট।
শেয়ারের দাম হারিয়ে রাস্তায় নেমেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে দরপতনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে দায়ী করেন।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করছে না। দুর্বল কম্পানিকে বাজারে টাকা তোলার অনুমোদন দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তারা। বাজারে পতন অব্যাহত, তার পরও কমিশন নীরব দর্শক। এক সপ্তাহের মধ্যে ইস্যুমূল্যের নিচে অবস্থানকারী কম্পানির শেয়ার কেনার বিষয়ে বাই-ব্যাক আইন এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে একা ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণবিষয়ক আইন কার্যকর করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। তারা ছয় দফা দাবি জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আইপিওর বাণিজ্য বন্ধ করা, ইস্যুমূল্যের নিচে থাকা শেয়ারের বাই-ব্যাক আইন প্রণয়ন, পুঁজিবাজারে জেড ক্যাটাগরি ও ওটিসি মার্কেটের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রভৃতি।
আগের বছরের তুলনায় এবার গ্রামীণফোনের অন্তর্র্বতীকালীন লভ্যাংশ ৩৫ শতাংশ কমেছে। আর পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের অবসায়ন হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অর্থ ফেরত না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ফলে ‘প্যানিক সেল’ বেড়ে গেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার ছাড়ছে। কিন্তু আর্থিক সংকটে থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসতে পারছেন না। সব মিলিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৯১ পয়েন্ট। প্রায় আড়াই বছর আগে এ অবস্থান ছিল ডিএসইতে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি জনমনে বিরূপতা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ শেয়ারবাজারের অভিঘাত সমাজে দ্রুত পড়ে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্টরা দ্রুত সুবিবেচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।