স্পোর্টস ডেস্ক :
নিউজিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪২ রান। লক্ষ্যমাত্রা খুব বেশি বড় না হলেও প্রোটিয়া বোলিং আক্রমণের সামনে এই উইকেটে রান তোলা সহজ ছিল না। কিন্তু কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ধৈর্য্যশীল সেঞ্চুরি ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের দারুণ হাফ সেঞ্চুরিতে তিন বল বাকি থাকতে চার উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল ৮ রান। কিন্তু ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সব আশা শেষ করে দেন উইলিয়ামসন। এই ছক্কার সাহায্যেই তার সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়। ইনিংস শেষে ১৩৮ বলে ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন উইলিয়ামসন। ৪৭ বলে ৬০ রান করে আউট হন গ্র্যান্ডহোম। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে ক্রিস মরিস ৩টি, আন্দিল ফেলুকায়ো ১টি, কাগিসো রাবাদা ১টি ও লুঙ্গি এনগিদি ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
পাঁচ ম্যাচ খেলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠে গেছে নিউজিল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তারা চারটিতে জয় পেয়েছে। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। অন্যদিকে, ৬ ম্যাচ খেলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা একটিতে জিতেছে। আর একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় এক পয়েন্ট পায় তারা।
বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ওপেনার কলিন মুনরোকে হারালেও দলকে পথেই রেখেছিলেন উইলয়ামসন ও গাপটিল। কিন্তু দলীয় ৭২ রানে গাপটিল হিট উইকেট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর রস টেইলর এবং টম লাথামও দ্রুত ফিরে যান। পরপর উইকেট হারিয়ে দল চাপে পড়ে।
দলীয় ১৩৭ রানে জিমি নিশাম ফেরার পর দলের হাল ধরেন উইলিয়ামসন ও গ্র্যান্ডহোম। দুজনে মিলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৯১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। দলকে জয়ের কাছাকাছি রেখে ফিরে যান গ্র্যান্ডহোম। পরে উইলিয়ামসন ও মিচেল স্যান্টনার মিলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান উইলিয়ামসন।
বিশ্বকাপে বুধবার দিনের একমাত্র ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৪১ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আউটফিল্ড ভেজা থাকায় ম্যাচ শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায়। এই কারণে ম্যাচে এক ওভার কমানো হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন ভ্যান ডের ডুসেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হাশিম আমলা। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে লকি ফার্গুসন ৩টি, ট্রেন্ট বোল্ট ১টি, মিচেল স্যান্টনার ১টি ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই রান করতে সংগ্রাম করছিল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরে যান ওপেনার কুইন্টন ডি কক। ৮ বলে ৫ রান করেন তিনি। ওয়ানডাউনে নেমে অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস ৩৫ বলে ২৩ রান করে আউট হন। হাশিম আমলা যতোগুলো বল খেলেন সেই অনুযায়ী রান করেন একেবারে কম। ৫৫ রান করতে তিনি ৮৩টি বল খেলেছেন। পঞ্চম উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়ে দলের রান একটু বাড়িয়ে দেন ডুসেন ও ডেভিড মিলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৪ উইকেটে জয়ী নিউজিল্যান্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস: ২৪১/৬ (৪৯ ওভার)
(কুইন্টন ডি কক ৫, হাশিম আমলা ৫৫, ফাফ ডু প্লেসিস ২৩, এইডেন মার্করাম ৩৮, ভ্যান ডের ডুসেন ৬৭*, ডেভিড মিলার ৩৬, আন্দিল ফেলুকায়ো ০, ক্রিস মরিস ৬*; ম্যাট হেনরি ০/৩৪, ট্রেন্ট বোল্ট ১/৬৩, লকি ফার্গুসন ৩/৫৯, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১/৩৩, মিচেল স্যান্টনার ১/৪৫)।
নিউজিল্যান্ড ইনিংস: ২৪৫/৬ (৪৮.৩ ওভার)
(মার্টিন গাপটিল ৩৫, কলিন মুনরো ৯, কেন উইলিয়ামসন ১০৬*, রস টেইলর ১, টম লাথাম ১, জেমস নিশাম ২৫, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ৬০, মিচেল স্যান্টনার ২*; কাগিসো রাবাদা ১/৪২, লুঙ্গি এনগিদি ১/৪৭, ক্রিস মরিস ৩/৪৯, আন্দিল ফেলুকায়ো ১/৭৩, ইমরান তাহির ০/৩৩)।
ম্যাচ সেরা: কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)।