সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের শেষ ধাপে সুনামগঞ্জের স্থগিত হওয়া জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ আল আজাদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৪৬টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ভোট গ্রহণে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ আল আজাদ তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রাথী রেজাউল করিম শামীমকে ২ হাজার ৬ শত৮৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে, ইউসুফ আল আজাদ (নৌকা) ৩১ হাজার ৮৫ ভোট ও বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম শামীম (মোটর সাইকেল) ২৮ হাজার ৪০০ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে বিদ্রাহী প্রার্থী রেজাউল করিম শামীমের পক্ষ থেকে তার ছেলে রিয়াজ মাহমুদ মেহেদী বাবার ফলাফল মেনে নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেন- আমার বাবা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। সকল কর্মী সমর্থক এবং শুভাকাঙ্খিকে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আব্বু তুমি নির্বাচনে পরাজিত হলেও জামালগঞ্জের মানুষের কাছে একজন যোদ্ধা হয়েই বেঁচে থাকবে। বিজয়ী প্রার্থী এবং তার সমর্থকদের অভিনন্দন।
উল্লেখ্য, ১০ মার্চ সুনামগঞ্জের ১০ টি উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচনে প্রার্থীদের আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এনে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করে দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : দেশের ৪৯২তম এবং সর্বশেষ প্রতিষ্ঠা পাওয়া উপজেলা শায়েস্তাগঞ্জের প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফল নৌকা প্রতীকে আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল ১৬ হাজার ৯৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী বেলাল আনারস প্রতীকে ৮ হাজার ৫৮৮ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন দু’জন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২২ হাজার ৬২১ এবং নারী ভোটার ২৩ হাজার ৪৫ জন। ১৮টি কেন্দ্রের ১১৪টি ভোট কেন্দ্রের ১১৪টি বুথে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বাস্তবায়নের পর থেকেই নির্বাচনকে নিয়ে ছিল ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অনুষ্ঠিত হলো এ উপজেলার নির্বাচন। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয় ভোটগ্রহণ।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছেন। যেহেতু জেলায় একটিমাত্র উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ছিল, সেই ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অভাব ছিল না। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুষ্ঠুভাবে ভোগগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর হবিগঞ্জের নিউফিল্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলার দাবি জানান হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু জাহির। পরে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে ৪৯২তম উপজেলা হিসেবে শায়েস্তাগঞ্জকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
এদিকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী আলী আহমদ খান।
সেন্টার দখল ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে এনে মঙ্গলবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
আলী আহমদ খানের ছেলে তানিম আহমেদ খান রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকরা বিভিন্ন সেন্টার দখল করে ভোটে কারচুপির মাধ্যমে তার বাবার জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আলী আহমদ খান এবং তার সমর্থকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগও করেন তিনি।