স্টাফ রিপোর্টার :
ওপেন হার্ট সার্জারি চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল হার্ট লাং মেশিন। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ১ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার ৪৫০ টাকা মূল্যের ওই মেশিনটি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেছিল কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার (সিএমএসডি)। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, অভিজ্ঞ সার্জন আর দক্ষ জনবলের অভাবে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
ওসমানীতে অব্যবহৃত পড়ে থাকা মেশিনটি ঢাকায় ফিরিয়ে নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠায় ঢাকায়। এতে অন্তোষ দেখা দেয় সিলেটে। মেশিনটি ফেরত না নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক সেন্টার চালুর দাবি উঠেছে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে হাসপাতালের তৎকালীন কার্ডিও-ভাস্কুলার সার্জন সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুর রহমানের চাহিদার প্রেক্ষিতে একটি হার্ট লাং মেশিনের আবেদন করা হয়। ওই চাহিদাপত্রের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ মেশিনটি এসেছিল হাসপাতালে। কিন্তু ডা. মাহবুবুর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুর পর কার্ডিও-ভাস্কুলার সার্জনের অভাবে ওই মেশিনটি আর ব্যবহার হয়নি ওসমানীতে। ফলে প্রায় সাড়ে ৫ মাস ধরে বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে থাকা মেশিনটি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
জানা গেছে, হার্ট লাং মেশিনের মাধ্যমে ওপেন হার্ট সার্জারির জন্য হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক সেন্টারের প্রয়োজন। এছাড়া দক্ষ কার্ডিয়াক সার্জন, সহকারী ও নার্স প্রয়োজন। কিন্তু ওসমানী হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক সেন্টার নেই। কার্ডিয়াক সেন্টার করার মতো কোনো ভবনও নেই। এছাড়া হাসপাতালে কোন কার্ডিয়াক সার্জন ও দক্ষ জনবল না থাকায় পরীক্ষামূলকভাবেও মেশিনটি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এরকম অবস্থায় অব্যবহৃতভাবে পড়ে থাকা হার্ট লাং মেশিনটি ব্যবহারের জন্য ঢাকায় ফিরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গত ১১ এপ্রিল ওসমানী হাসপাতাল থেকে চিঠি প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ক্ষোভ দেখা দেয় সিলেটে। হার্ট লাং মেশিনে সিলেটেই রাখার দাবিতে কর্মসূচি পালন করে সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন। এরপর ওসমানীর পরিচালকের সাথে দেখা করে সিলেট উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের স্মারক সংরক্ষণ পরিষদ’র নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান বলেন, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালে একটি পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক সেন্টার স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও আন্তরিক। তিনি আরও বলেন, বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে থাকা মূল্যবান হার্ট লাং মেশিনটি ওসমানীতে ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। তাই মেশিনটি যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য এটি ফেরত নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে ওসমানীতে কার্ডিয়াক সেন্টার নির্মাণ হলে এরকম একটি মেশিন ফেরত দেয়া হবে বলে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। একটি মহল হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করতে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।