গতকাল সোমবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-এর সম্মুখে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতিকৃতি অবমাননার প্রতিবাদে সংক্ষুব্ধ নাগরিকবন্ধন ও প্রতিবাদ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দায়ি ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়। সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেট-এর পক্ষ থেকে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয় হয়, আমরা সরকারের কেউ না, আওয়ামী লীগের কেউ না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এই দেশ, মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুকে আমরা এক সূত্রেই গাঁথা দেখি। এর যে কোন একটির অপমানে আমরা সংক্ষুব্ধ হই। আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারের কাছে পাঁচটি দাবী জানানো হয় – এ ঘটনায় হাইকমিশনে কর্মরতদের কোন অবহেলা ছিলো কিনা তা তদন্ত করে দেখা, ফেসবুকে যাদের চেহারা দেখা গেছে তাদের চিহ্নিত করা, এরা বৃটিশ নাগরিক হলে যুক্তরাজ্যকে চাপ দিয়ে শাস্তির আওয়াত নেয়া, এরা দ্বৈত নাগরিক হলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করা, পার্সোনা নন গ্রান্টা বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা, যেনো এরা বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে।
সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেট -এর সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম-এর সভাপতিত্বে নাগরিকবন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশ্মির রেজা’র সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেট-এর অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হাসান মোরশেদ। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের আদালতের একটি রায়কে কেন্দ্র করে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আক্রমন করে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এরই সাথে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অবমাননা করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্রেফ একজন রাজনৈতিক নেতা নন, কেবল সাবেক রাষ্ট্রপতি নন- সাংবিধানিক ভাবেই তিনি জাতির পিতা, ঐতিহাসিক ভাবেই তিনি রাষ্ট্রের স্থপতি। তাঁর এই অপমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধকে অপমান। তিনি আরও বলেন, সরকারকে ও জবাব দিতে হবে, দেশের বাইরে দূতাবাসে তারা বঙ্গবন্ধুর অসম্মান ঠেকাতে ব্যর্থ হলেন কেনো? এই ঘৃণ্য অপরাধের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে? আওয়ামীলীগকেও জবাব দিতে হবে। এই দেশে এখনো বঙ্গবন্ধুর ইমেজই তাদের রাজনীতর ভিত্তি কিন্তু এমন জঘণ্য ঘটনার পর দলীয়ভাবে কোন প্রতিক্রিয়া আমরা দেখলাম না কেনো? খুচরা কিছু কর্মী দিয়ে জিয়াউর রহমানের ছবিকে অপমান করে সস্তা স্ট্যান্টবাজি হয় কিন্তু এতে বঙ্গবন্ধুর আরো বেশী অপমান হয়- এই বোধ তাদের তৈরী হতে হবে।
এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মুকির হোসেন চৌধুরী ও মুশফিক জায়গীরদার, দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, ইমজার সাবেক সভাপতি সংগ্রাম সিংহ, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত গুপ্ত, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক এমদাদ রহমান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি