কে. এম. লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটি পেয়ে পর্যটকদের উপচে পড়া ঢল নেমেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন স্পট জাফলং ও বিছনাকান্দিতে। ঈদের পরদিন থেকেই ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় করছেন এ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। সরকার এখানকার পর্যটনের দিকে নানা উন্নয়ন করার ফলে দেশের অপরাপর পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ন্যায় এখানকার প্রাকৃতিক রুপ বিভিন্ন সাজে সেজেছে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এসব সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা প্রায় লক্ষাধিক ভ্রমণপিপাসুরা। প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে সারা বছরই পর্যটক লেগেই থাকে। ঈদ মৌসুম এলে যেন এখানে পর্যটকদের সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো। আর এসব পর্যটকদের থেমে নেই তাদের বাঁধ ভাঙা উল্লাসের। ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগী করতে কেউ স্বপরিবারে, আবার কেউবা বন্ধু বান্ধব সাথে নিয়ে ছুটে এসেছেন গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। প্রকৃতি কন্যা জাফলং যেন আগের মতোই তার আপন মাধুর্যতায় ঘিরে ধরেছে তার দর্শনে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের। অন্যান্য বছর এখানকার যাতায়াতের সুবিধা রাস্তাঘাটের নানা অভিযোগ থাকলেও এবার ছিলো তার ব্যতিক্রম। বেশিরভাগ পর্যটকই রাস্তাঘাটের উন্নীতকরণের কাজ দেখে কিছুটা সন্তুষ্ঠি প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি জাফলংয়ের মায়াবী ঝর্ণা, প্রকৃতির অপ্সরাখ্যাত বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইয়ের ফাটাছড়ায়ও অনেক পর্যটক লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক এই পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সৌন্দর্য খুব সহজেই আকৃষ্ট করে ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের।
গতকাল শনিবার জাফলং পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, জাফলং জিরোপয়েন্টে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ ভারতের ঝুলন্ত ব্রীজ দেখছেন আর সেলফি তুলছেন। পিয়াইনের স্বচ্ছ জলে গা ভিজিয়ে সাঁতার কাটছেন অনেকেই। আর এসব মুহূর্তকে ক্যামেরায় বন্দী করে স্মরণীয় করে রাখছেন।
ঢাকার উত্তরা থেকে স্বপরিবারে আসা শাহাব উদ্দীন মুন্সি জানান, ঈদের ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে এবারও তিনি জাফলংয়ে এসেছেন। তবে এর আগে অনেকবার আসলেও এখানকার প্রাকৃতিক মায়া যেন তাকে জড়িয়ে রেখেছে। তবে আগেরবারের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের উন্নতি এবং পর্যটনের উন্নয়ন তার কাছে স্বস্তি এসেছে।
জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ দেবাংশু কুমার দে জানান, এবারের ঈদ মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে পর্যটক এসেছেন। তাদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের টিমসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন টিম মাঠে নিয়োজিত রয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, সরকার পর্যটনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কারণে সারা বছরই এখন গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। ঈদে পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ও নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন সে লক্ষে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি এখানে ট্যুরিস্ট পলিশ, থানা পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও রোভার স্কাউটের সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন।