নরাপদ খাদ্যের নিয়শ্চয়তা চাই

21

প্রতিদিন আমরা যে খাদ্যপণ্য গ্রহণ করছি, তা মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর ও ভবিষ্যতের জন্য কী বিপদ ডেকে আনছে, খাদ্যে ভেজাল, কীটনাশক ও রাসায়নিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে সাধারণ ভোক্তারা কোনো খাবারেই নিশ্চিন্ত হতে পারছে না, স্বস্তি পাচ্ছে না। ওদিকে মনিটরিং সংস্থাগুলো দুর্বল করে রাখা হয়েছে। অনেকের গাফিলতি রয়েছে, অনেকে আবার চাইলেও সব কাজ করতে পারছে না। এ বছরের শুরুতে হাইকোর্টের একটি রুলের পরিপ্রেক্ষিতে খাবার পানি পরীক্ষা করে বিএসটিআই। ২২টি ব্র্যান্ডের জার ও বোতলের পানি পরীক্ষা করে সাতটি ব্র্যান্ডের পানিই মানহীন পাওয়া যায়। বছর দেড়েক আগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) এক গবেষণায় রাজধানীর বাসাবাড়ি, অফিস-আদালতে সরবরাহ করা ৯৭ শতাংশ জারের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রায় কলিফর্ম বা মানুষ ও প্রাণীর মলের জীবাণু মেলে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) একাধিক পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাস্তুরিত দুধ এবং গরুর কাঁচা দুধেও ধরা পড়েছে ক্ষতিকর মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যাকটেরিয়া। এমন অবস্থায় মানুষ যে আতঙ্কিত হবে, এটাই স্বাভাবিক।
ভোক্তার নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তার বিষয়ে ১৮টির বেশি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সিটি করপোরেশন। খাদ্য নিরাপদ রাখা তথা খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য সরাসরি আইন আছে ৩৫টি। আংশিকভাবে খাদ্যসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদারকি বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আইন আছে ৬৫টিরও বেশি। শতাধিক আইন থাকলেও সমন্বিত পদক্ষেপের অভাবে এবং প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে কোনো খাদ্যপণ্যেরই বিশুদ্ধতা নিশ্চিত হয়নি এখনো। বাজারে থাকা ভোগ্যপণ্যের মান, মিথ্যা বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করার জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১৭ জনসহ সারা দেশে ৭২৮ জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, কিন্তু তাঁদের কাজ খুব একটা দৃশ্যমান নয়।
মানুষের মন থেকে খাদ্যভীতি দূর করতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব তদারকি কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষ তৎপর হলে মানসম্পন্ন খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করা সম্ভব।