কাজিরবাজার ডেস্ক :
এবারের বাজেটের বরাদ্দ কোনো মন্ত্রণালয়ে নয়, সরাসরি প্রকল্প পরিচালকদের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের অধীনে যে ঝিনাইদহ যশোরে যে প্রকল্প আছে তার পুরো বাজেট প্রথম দিনই আমরা পাঠিয়ে দেবো। মন্ত্রণালয়ে আসা লাগবে না। আজকেই এটা আলোচনা হয়েছে।
সোমবার (২০ মে) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ পিপিআরসি ও ব্র্যাকের উদ্যোগে আয়োজিত ‘দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন শীর্ষক’ প্রাকবাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান একথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেসব দেশে ধারাবাহিকতা ছিল না, সেসব দেশে উন্নয়ন কম হয়েছে। আমরা প্রথমবারের মতো ধারাবাহিক হয়েছি, আওয়ামী লীগের লোক আওয়ামী লীগের কথা বলছি। কিন্তু বাস্তবে ধারবাহিকতার বিষয়টা আমাদের সবার নজরে রাখা উচিত।
‘বাজেটের ৬ শতাংশের এক শতাংশ নগর সরকারের জন্য বরাদ্দ হয়। কিন্তু এটার মধ্যে ঝিনাইদহ কত পাবে, ঢাকা কত পাবে সেটা ভাবা হয়নি। এটা নিয়ে ভাবতে হবে। আমি একা কিছু করতে পারবো না। সরকারের সবাই মিলে করতে হবে। আমি সবার নজরে আনবো। তবে এটা খুব কঠিন। এটাকে এভাবে ভাগ করা যাবে না।’
তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয় সরকার আর ভারতীয় স্থানীয় সরকারের মধ্যে পার্থক্য আছে। বাংলাদেশ সরকার ওয়ান হাউজ ওয়ান গভর্নমেন্টের সরকার। এখানে ফেডারেল স্ট্রাকচারের ভারতের সঙ্গে তুলনা করলে সমস্যা হবে। যাইহোক আমরা এটাকে কীভাবে আরও প্রসারিত করতে পারি, কীভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারি সেটা দেখতে হবে।
‘সরকারের ধারাবাহিকতা যে উন্নয়নের জন্য কত জরুরি, কত প্রয়োজনীয় এটা গত ১১ বছরে প্রমাণ হয়েছে। স্থিতিশীল, ধারাবাহিক সরকার যে উন্নয়নের জন্য পারফেক্ট সেটা আমাদের এখানে পরীক্ষা বাকি ছিল। পৃথিবীর অন্য দেশে পরীক্ষা হয়ে গেছে। কোরিয়া, তাইওয়ান, চীন থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে এরইমধ্যে প্রমাণিত।’
বৈষম্য বাড়ছে (ধনী-গরিবের) স্বীকার করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈষম্য বাড়া অবশ্যই উচিত নয়। এটা অনৈতিক। তারপরও বলবো, আমাদের টার্গেট হলো বটম লাইনে যারা আছে তাদের পেটে একটু ভাত দেওয়া। কালিজিরা না হোক, বাসমতি না হোক, সাদা মোটা চালের ভাত দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। আমরা মনে করি যে মোটামুটিভাবে সেটা আমরা করতে পেরেছি। এটা হলো আমাদের বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অগ্রাধিকার। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার দারিদ্র্য কমিয়ে আনা। সেখানে আমরা সফল হয়েছি।
স্থানীয় সরকারগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সেটাকে জীবন দিয়েছি। উপজেলা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, জেলা পরিষদ ছিলই না, আমরা এনেছি। নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি। নির্বাচন নিয়ে নানা জনে নানা কথা বলছে, কোনো সমস্যা নেই, আমরা এগুলো শুনবো। প্রশ্ন হলো আমরা হাইওয়েতে আছি। হাইওয়ের মাঝামাঝি না থেকে পাশে আছি। কিন্তু আমরা হাইওয়েতে।
পিপিআরসির প্রধান ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। ভবিষ্যৎ নগর ও স্থানীয় সরকার শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পৌরসভা সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞা ড. তোফায়েল আহমদ, আইইউবির অধ্যাপক ড. সলিমুল হক, ব্র্যাকের হাসিনা মোস্তফা।
পৌরসভার মেয়রদের মধ্যে বক্তব্য দেন, পৌরসভা সমিতির সভাপতি পাবনার বেড়া পৌরসভার মেয়র আবদুল বাতেন, সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকার, বগুড়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র মাহতাব আলী লেবু, গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার মেয়র মো. মোতাহার হোসেন, মোংলা পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান, কাকনহাট পৌরসভার মেয়র মো. আব্দুল মজিদ, সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি, ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান প্রমুখ।