মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পৌরসভার একমাত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্তুপ। আর এই স্তুপের ময়লা আর্বজনার প্রচন্ড দুর্গন্ধে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানাবিধ সমস্যায় হাজার হাজার কোমলমতী শিক্ষার্থী পথচারীসহ এলাকাবাসী। আর এই আর্বজনার স্তুপের কারণে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। লেখাপড়ায় বিঘিœত হচ্ছে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ হাজার শিক্ষার্থী।
ইতিমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে থেকে ভাগাড় অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন, স্মারকলিপি ও মানববন্ধন হলেও তার প্রতিফলন হয়নি।
পৌরসভা ভাগাড় স্থানান্তরের সর্বশেষ ৬ মাস সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় এবার সেই ময়লার ভাগাড়ে নামলেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
শনিবার সকালে এলাকাবাসী এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তিনি ১০মিনিটের ফেসবুক লাইভে এর প্রতিবাদ করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ সময় তিনি স্থানীয় এমপি ও মেয়রের ছেলে-মেয়েরা ঢাকা বা বিদেশে লেখা পড়ে, তাই তাদের এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে দরদ নেই বলেও মন্তব্য করেন।
জানা যায়, ১৯৩৫ সালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকাল থেকে পৌরসভার মালিকানাধীন কলেজ রোড এলাকায় প্রায় এক একর জমি নিয়ে শহরের সব ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিনই এখানে ফেলা হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এই জায়গায় গড়ে উঠেছে বিশাল আবর্জনার স্তুুপ। সেই স্তুুপ থেকে আসা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা, শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ও দি বার্ডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদরাসাসহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে রয়েছেন।
এলাকাবাসী প্রতিবাদের মুখে পৌর কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের জেটি রোডে আরেকটি আবাসিক এলাকার মধ্যে ময়লা ফেলার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
এ ব্যাপারে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা প্রবল আপত্তি ও প্রতিরোধ গড়ে তুলে। একপর্যায়ে তারা আদালতের আশ্রয় নেয়। এ অবস্থায় থমকে যায় ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। তবে নতুন জায়গায় আদৌ ময়লা ফেলা যাবে কিনা তা অনিশ্চিত রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের ছাত্রী ফাহিমা আক্তার ও ইমরান আহমেদ,নাহিদ আহমেদ জানান, ময়লার প্রচন্ড দুর্গন্ধে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করা কষ্টকর। ময়লার গন্ধে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় ক্লাসে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ভাগাড়ের আশপাশের বাসিন্দারা আক্তারুজ্জামান দিপু বলেন, ‘বাতাস বেশি হলে ঘরের ভেতর পর্যন্ত গন্ধ ঢুকে যায়। তখন দম নেয়া যায় না। কিন্তু কিছু করার নাই। ঘরবাড়ি ছেড়ে তো যাওয়া যায় না, তাই থাকি।’
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধের জন্য শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অসুবিধা হচ্ছে। গন্ধের কারণে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনেকেই ক্লাসে আসা কমিয়ে দিয়েছে।