কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই প্রথম কংগ্রেসের চেয়ে বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিজেপি। এবার কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত ৪২৩টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আরও কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে বলে দল সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে বিজেপি ৪৩৭ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এর আগে কখনও এত আসনে লড়েনি বিজেপি। তার আগে জনসঙ্ঘও কখনও এর চেয়ে বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। এদিকে, এখনও প্রতিবছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে পাঞ্জাবি ও মিষ্টি পাঠান- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ মন্তব্যের জেরে মমতা বলেছেন, সৌজন্য বিক্রি করতে ভালবাসেন মোদি।
বিজেপির প্রার্থী সংখ্যা এভাবে বাড়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ কয়েকটি ধারণা তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন কংগ্রেসের পর বিজেপিও যে সারাদেশ জুড়ে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে পেরেছে তা এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট। কিন্তু কংগ্রেস বলছে এই যুক্তিটি ঠিক নয়। তাদের দাবি দেশে এমন অনেক রাজ্য আছে যেখানে বিজেপি কোন দলের সঙ্গে জোট করেনি। আর সেই কারণেই তাদের বেশি করে প্রার্থী দিতে হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে অন্ধপ্রদেশ বা পশ্চিমবঙ্গের কথা বলা হচ্ছে। তেলেঙ্গানারও একই অবস্থা। এই তিনটি জায়গাতেই একা লড়ছে বিজেপি। আর সেই কারণে প্রত্যেকটি আসনে তাদের প্রার্থী দিতে হচ্ছে । ২০০৯ সালে বিজেপি দেশের মধ্যে ৪৩৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। সেবার ৪৪০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। ৪৩৩টির মধ্যে ১১৬টি আসনে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। আর কংগ্রেস জিতেছিল ২০৬টি আসনে। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব সাফল্য পায় বিজেপি। সেবার ৪২৮টি কেন্দ্রে লড়েন বিজেপি প্রার্থীরা। তার মধ্যে ২৮২টিতে জেতে তারা। আর ৪৬৪টি আসন থেকে লড়ে মাত্র ৪৪টিতে জিতে ছিল কংগ্রেস। এই দুটি দলের বাইরে একমাত্র মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি দেশের বিভিন্ন জায়গার বহু আসনে প্রার্থী দিয়ে থাকে। তবে এবার তারা সেটা পারেনি। গত লোকসভা নির্বাচনে বিএসপি ৫০৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। কিন্তু একটিও জিততে পারেনি। এবার অবশ্য অতগুলো আসনে লড়ছে না মায়াবতীর দল। এখনও পর্যন্ত ১৩৯টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে তারা। আরও কিছু আসনে প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সৌজন্য বিক্রি করতে ভালোবাসেন মোদি- মমতা : নির্বাচনের মৌসুমে একটি অরাজনৈতিক কথোপকথনে অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, এখনও প্রতিবছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে পাঞ্জাবি ও মিষ্টি পাঠান। এই বক্তব্যকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এ নিয়ে দু’বার প্রতিক্রিয়া দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের সিউড়ির জনসভা থেকে মমতা বলেন, সৌজন্যের পণ্যায়ন কখনই গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। তিনি বলেন, ‘আমি শুনলাম মোদি বাবু বলেছেন আমি তাকে পাঞ্জাবি পাঠাই। সমস্যাটা কোথায়? দুর্গাপুজোর সময় আমরা অনেককেই উপহার পাঠাই। আমরা আমাদের শিল্পীদের তৈরি জিনিসপত্র বিশ্বের বাজারে তুলে ধরতে চাই। শুধু প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাই এমনটা নয়, সকলকেই পাঠাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটির পণ্যায়ন করেন। মনে রাখবেন সৌজন্যে আর রাজনীতি এক নয়। শুধু পাঞ্জাবি কেন আমি জন্মদিনে সবাইকে চিঠিও পাঠাই।’