‘আসুন ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে বাঁচি’ এই আহ্বানে ‘আবুসিনা ছাত্রাবাস ভবন’ সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেছে নগরনাট।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ৪টায় আবুসিনা ছাত্রাবাসের ভিতরে এই প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।
নগর নাটের প্রতিবাদী পরিবেশনায় ছিল গান ‘আগুন পাখি’ ‘আমার অন্তরের কথা বলতে চাই’ ‘আমরা নানকা জাগে’। গান পরিবেশনায় ছিলেন, নগরনাটের অরুপ বাউল, উজ্জল চক্রবর্তী, বর্ষন, রনি, সপ্ত, মুক্তা, জেনি, শ্যামলী, রুপালী।
গানের ফাঁকে ফাঁকে আবুসিনা ছাত্রাবাস রক্ষায় বক্ত্যব দেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউড সিলেট কেন্দ্রের আহবায়ক ও লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক জেরিনা হোসেন, সিলেটের ঐতিহ্য রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজের মুখপাত্র ডাঃ শাহ জামান চৌধুরী বাহার, বাপার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু , গণজাগরণ মঞ্চের সদস্য রাজিব রাসেল প্রমুখ।
বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউড সিলেট কেন্দ্রের আহবায়ক ও লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক জেরিনা হোসেন বলেন, ‘এই ভবন একটি অমূল্য সম্পদ। এটা ভেঙ্গে ফেলা অন্যায়। এরকম একটি স্থাপত্যশৈলী আর হবে না। স্থাপত্য শিল্পের ভাষায় একে বলা হয় ‘প্রাইড অব প্লেইস’। বাংলাদেশে খুব কম জায়গায় এরকম জায়গা আছে। শহরের ভিতরে এত সুন্দর স্থাপনা খুব কম শহরেই দেখা যায়। তাই এই শৈল্পিক স্থাপনাকে ‘গণ পরিষর’ করা উচিত। যেখানে মানুষজন আড্ডা দিতে পারবে। প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে পারবে। ছোটরা খেলাধুলা করতে পারবে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড হবে।’
তিনি বলেন, ‘গণপূর্তের কর্মকতারা বলেছেন এখানে কিছু পুরোনো টিনের বাসা আছে। তাদের এ কথা সম্পূর্ণ ভুল। নিচক কিছু পুরোনো টিনের বাসা নয়, এগুলো সিলেটের ঐতিহ্য, সম্পদ। ইতিহাস, ঐতিহ্যের কারণে সিলেট বাংলাদেশের অন্যান এলাকার চেয়ে পৃথক। তাই এখানে পর্যটকদের ও ভিড় থাকে। এটা আমাদের পরম সৌভাগ্য যে এই স্থাপনা সিলেট আছে। মানুষ দূর দুরান্ত থেকে বহুতল ভবন দেখতে সিলেট আসবে না। এসব ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন দেখতে আসবে।’
জেরিনা হোসেন বলেন, ‘এই জায়গাকে ঠিক রেখে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটা ভাবতে হবে। কেউ যদি চান এখন থেকে কোনো লাভ হবে না সেটা ভুল ধারণা। চাইলে এই ভবন ধ্বংশ না করেও এখানে বানিজ্যিক ভাবে কাজে লাগানো যাবে। এর জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই জায়গাটা হাসপাতালের জন্যও সঠিক না। ৩৬৫ দিন চলমান একটি হাসপাতালের কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার জন্য অনেক কারণ আছে। পাশে মাদ্রাসা মাঠ, যেখানে সারা বছর ওয়াজ হয়। জ্যাম নিত্যদিনের সঙ্গী এই সড়কের। পাশে আরেকটি খেলার মাঠ। যেখানো সারাবছর হট্টগোল থাকে। এই পরিবেশে একটি হাসপাতালের জন্য উপযুক্ত স্থান এটি নয়।’
নগরনাটের প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক ঐক্য মৈত্রির আহবায়ক এডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, স্থপতি রাজন দাশ, স্থপতি কৌশিক শাহা, বাপার যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ছামির মাহমুদ, ব্যংক কর্মকর্তা গউছ মইনুদ্দিন হায়দার, সাংস্কৃতি কর্মী ব্রতচারী বিমান তালুকদার, ছাত্র ইউনিয়নের নাবিল এইচ, চারণ সাংস্কৃতি কেন্দ্রের রুবায়েত হোসেন, স্টেমাইজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব সুন্নাহ, চৈতন্যর প্রকাশক রাজিব চৌধুরী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি